সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হলেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস চেয়ার স্যার ফজলে হাসান আবেদ।
রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে তার মরদেহ সাদা ফুলে ঘেরা লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে আর্মি স্টেডিয়ামে আনা হয়। আগে থেকেই শ্রদ্ধা জানাতে অপেক্ষায় ছিলেন স্টেডিয়ামে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
প্রথমে স্যার আবেদের মরদেহে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মেজর আশিকুর রহমান। এরপর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে উপসামরিক সচিব কর্নেল মো. সাইফুল্লাহ। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিএনপির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তামিম, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ফজলে হাসান আবেদের মরদেহে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানানো শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় আর্মি স্টেডিয়ামেই তার জানাজা হয়।
এরপর ফজলে হাসান আবেদকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়। ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস চেয়ার স্যার ফজলে হাসান আবেদ শুক্রবার রাত ৮টা ২৮ মিনিটে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। ২৮ নভেম্বর তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ফজলে হাসান আবেদ ১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাবনা জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর তিনি ব্রিটেনের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে নেভাল আর্কিটেকচারে ভর্তি হয়েছিলেন। সেটা বাদ দিয়ে তিনি লন্ডনের চার্টার্ড ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউনট্যান্টসে ভর্তি হন। ১৯৬২ সালে তিনি তার প্রফেশনাল কোর্স সম্পন্ন করেন।
১৯৮০ সালে র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার, ২০১১ সালে ওয়াইজ প্রাইজ অব এডুকেশন, ২০১৪ সালে লিও টলস্টয় ইন্টারন্যাশনাল গোল্ড মেডেল, স্প্যানিশ অর্ডার অব সিভিল ম্যারিট, ২০১৫ সালে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৭২ সালে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা।