তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতা তথা প্রভাবশালী মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একের পর এক টাকার খনি ও বান্ধবী আবিষ্কার হচ্ছে। তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রী থাকাকালে নিয়োগ বাণিজ্যে ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়া সত্ত্বেও, মন্ত্রী পদ ও দলীয় পদে বহাল তবিয়তেই রয়ে গেছেন। এই নিয়ে নেটিজেনরা সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ আজ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল ও মন্ত্রী পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের চেয়েও অধিক দুর্নীতিবাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো এবং ফিরহাদ হাকিম মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।
পশ্চিমবঙ্গের অভিজ্ঞ রাজনৈতিক নেতাদের ধারণা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় যদি তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের সম্পর্কে মুখ খোলেন; এজন্যই তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে, তৃণমূল কংগ্রেসের তুলনামূলক সৎ ও নিষ্ঠাবান বিধায়কগণ, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই গুজবের আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছেন প্রাক্তন সংসদ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী।
মিঠুন চক্রবর্তী প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের ৩৮ জন বিদ্রোহী বিধায়ক তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাদের মধ্যে ২১ জন বিধায়ক সরাসরি মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলেছেন। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে মিঠুন চক্রবর্তীর এই দাবি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ প্রাপ্ত সংবাদ, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, আজ বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় বিকেল ৫টায় তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, এই বৈঠকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নিতে পারে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।