14rh-year-thenewse
ঢাকা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অপারেশন সিঁদুর অভিযানে শনাক্ত করতে পারেনি চীনের তৈরি এয়ার সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম

ডেস্ক
May 8, 2025 3:27 am
Link Copied!

কাশ্মীরে পাহেলগাঁও-তে নৃশংস জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমশ উত্তেজনায়  পাক সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চীনের তৈরি এয়ার সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। ভারতের অপারেশন সিঁদুর অভিযানে শনাক্ত করতে পারেনি চীনের তৈরি এয়ার সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম।  বড় আঘাত নেমে এসেছে চীনা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতার উপরও।

ব্যর্থ পাকিস্তানি এয়ার ডিফেন্সঃ  মঙ্গল-বুধবারের রাতে রাফাল যুদ্ধবিমান থেকে ফ্রান্সের তৈরি স্ক্যাল্প (SCALP) ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে। নয়টিই একেবারে নির্ভুল ভাবে লক্ষ্যভেদ করেছে। কোনও ক্ষেপণাস্ত্রই বাধা পায়নি। অর্থাৎ ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে শনাক্তই করতে পারেনি চিনা রাডার ও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম।

মেড ইন চায়না এয়ার ডিফেন্সঃ  ২০১৪ সালে, ভারতে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই, চিন থেকে নয়টি এলওয়াই-৮০ লোমাডস (LY-80 LOMADS) কিনতে তৎপর হয়েছিল পাকিস্তান। ২০১৫ থেকে ২০১৬-র মধ্যে প্রথম ইসলামাবাদকে ছয়টি সিস্টেম সরবরাহ করেছিল বেজিং। ২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয় এই ব্যবস্থা। ২০১৯ সালে এসেছিল আরও একটি ব্যাচ।

এলওয়াই-৮০ লোমাডসঃ  এলওয়াই-৮০ লোমাডস সিস্টেমটি ১৫ মিটার থেকে ১৮ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত এবং ৪০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র এবং যুদ্ধবিমানকে বাধা দিতে পারে বলে দাবি বেজিংয়ের। বেজিং আরও বলে, এর রাডার ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে পারে।

প্রথম থেকেই সমস্যাঃ  সেই সময়ে নিম্ন থেকে মাঝারি উচ্চতার এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত বলে দাবি করেছিল পাকিস্তান। ইসলামাবাদের দাবি ছিল, রাডার এবং ইলেকট্রনিক জ্যামার-সহ এই চিনা সিস্টেম আকাশপথের হুমকির বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী ঢাল। কিন্তু প্রথম থেকেই এই ব্যবস্থাগুলিতে একের পর এক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। খুচরা যন্ত্রাংশের অভাব রয়েছে, চিনের থেকে পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত সহায়তাও দেওয়া হয়নি।

আগেও দেখা গিয়েছে ব্যর্থতাঃ  পাকিস্তানি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম যে এই প্রথম ব্যর্থ হলো তা নয়। ২০১৯ সালে বালাকোট বিমান হামলার সময়ে, পাকিস্তানের রাডার ব্যবস্থা একই ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল। তার পরে ২০২২ সালের মার্চে ভারত থেকে দুর্ঘটনাক্রমে ছোড়া ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রটিও শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছিল।

হরিয়ানার আম্বালা থেকে ওই সুপারসনিক ব্রহ্মোস ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রটি ভারতীয় আকাশসীমা দিয়ে ১০০ কিলোমিটার এবং পাকিস্তানের আকাশসীমা দিয়ে ১০৫ কিলোমিটার উড়ে গিয়েছিল। শেষে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মিয়াঁ চান্নুতে পড়েছিল সেটি। এর মধ্যে কোনও পর্যায়েই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে শনাক্ত করতে পারেনি পাকিস্তানের রাডার। অন্য দিকে পাকিস্তান বায়ুসেনারই একাধিক যুদ্ধবিমানকে গুলি করে নামিয়েছে এই এয়ার ডিপেন্স।

৩৮৮টি ত্রুটির তালিকাএর পর পাকিস্তান এলওয়াই-৮০ সিস্টেমে ৩৮৮টি ত্রুটি শনাক্ত করে সেই তালিকা চিনের হাতে তুলে দিয়েছিল। এর মধ্যে ১০৩টি ত্রুটি ছিল নতুন আবিষ্কৃত। বাকি ২৮৫টির কথা আগেও রিপোর্ট করেছিল ইসলামাবাদ। ২৫৫টি ত্রুটিকে অবিলম্বে সংশোধনের জন্য শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছিল।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই সিস্টেমকে সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত করতে চিনের কাছ থেকে বছরের পর বছর ধরে একের পর এক প্রযুক্তি কিনে গিয়েছে ইসলামাবাদ এবং সিস্টেম আপগ্রেড করে গিয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও, পাকিস্তানের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বাস্তব পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হলো।

ভারতের কেরামতিঃ  এ বারের হামলায় যে স্ক্যাল্প ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলিতে স্টেলথ প্রযুক্তি রয়েছে। অর্থাৎ রাডারকে ফাঁকি দেওয়ার উপায় রয়েছে। সেই সঙ্গে এই ক্ষেপণাস্ত্র অত্যন্ত কম উচ্চতা দিয়ে ওড়ে। তাই পাকিস্তানের রাডার সিস্টেম এগুলিকে শনাক্ত করতে আরও বেশি সমস্যায় পড়েছে।

পাশাপাশি, দেশব্যাপী সিভিল ডিফেন্স মক ড্রিলের ঘোষণা করে, অত্যন্ত সুচারু ভাবে এই হামলা চালিয়েছে ভারত। ফলে পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক এই হামলার জন্য তৈরিও ছিল না বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ডিকয় এবং সিগন্যাল জ্যামিং-এর মতো ইলেকট্রনিক যুদ্ধ কৌশলও ব্যবহার করেছিল ভারত।

http://www.anandalokfoundation.com/