মাগুরা থেকেআব্দুস সালেক মুন্নাঃ মাগুরায় ঈদের বাজার জমে উঠেছে । ঈদকে সামনে রেখে শহরের বিভিন্ন বিপনি বিতান গুলো জমে উঠেছে । ইতিমধ্যে শহরের বেবী প্লাজা , নুর জাহান প্লাজা, সুপার মার্কেট, সমবায় মার্কেট, কাজী টাওয়ার মার্কেট , খান প্লাজা , জমজম মার্কেট , আল-আমিন মার্কেট , জুতাপট্টির দোকান মালিকগুলো ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী নানা রঙের পরসা সাজিয়ে বসেছেন ।
মাগুরার ঈদ বাজারে তরুনীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে লং কামিজ, থ্রিপিচ ,লেহেগা, ইন্ডিয়ান ও পাকিস্থানী থ্রিপিচ অন্যতম । শহরের হাজী কমপ্লেক্সে অবস্থিত দোয়েল ফেব্রিক্স এন্ড টেইলার্স সত্তাধিকারী আলাউদ্দিন হোসেন জানান, দশ রোজার পর থেকে দোকানে খুব ভীড় । আমরা ক্রেতাদের পছন্দেও কথা মাথায় রেখে প্রতি বারই নিত্য-নতুন আধুনিক ডিজাইনের থ্রি-পিচ সংগ্রহে রাখি । এবার ঈদে তরুনীদের বেশি লং কামিজ তৈরি করছেন । পাশাপাশি ফ্লোর টাচ থ্রি-পিচ , পাখি থ্রি-পিচ , র্সারা থ্রিপিচ , চায়না থ্রিপিচের কদর অনেক বেশি । এসব থ্রিপিচ ২০০০-৩৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হ্েচ্ছ । এগুলো ছাড়া ইন্ডিয়ান ও পাকিস্থানী থ্রিপিচও অনেকে কিনছেন। পোশাক তৈরি করতে আসা টুকটুকি নামের এক তরুনী জানান, এবারের ঈদে আমার পছন্দের তালিকায় রয়েছে লং কামিজ । পাশাপাশি বাজারে আসা নতুন থ্রিপিচ র্সারা তৈরি করেছি ।
সুপার মার্কেটের অন্যতম গামেন্টস লিখন ফ্যাশানের সৈয়দ ফজলুল ইকবাল প্রিন্স জানান , প্রতি বারই আমি ঈদ কালেকশনে নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক সংগ্রহে রাখি । এবার ঈদে চায়না ফ্রক , র্সারা ,ফ্লোর টাচ পোশাক ভাল চলছে। প্রতিবারই আমার বিক্রি ভাল । এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি ।
কেনাকাটা বা ফ্যাশান সচেতনতাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে থাকলেও ছেলেদের জন্যও আয়োজনের কমতি থাকে না পোশাক বাজারে । মেয়েদের পাশাপাশি পছন্দ মত আধুনিক মর্ডান রেডিমেড ড্রেসটি বেছে নিতে এখন ছেলেদেরও চলছে কেনাকাটার ব্যস্ততা । মাগুরা শহরের বিভিন্ন ফ্যাশান হাউজ ,শপিং মল এবং ছেলেদের ছোট বড় রেডিমেট পোশাকের মার্কেটের গিয়ে দেখা গেছে নতুন কাট ও ডিজাইনের ভিত্তিতে দেশি-বিদেশি নানা ধরনের শার্ট ও টি শার্টের কালেকশন রাখা হয়েছে দোকান গুলোতে । রং বাহারি টি শার্টের পাশাাপাশি এবার ক্যাজুয়াল ব্র্যান্ডেড প্রিন্টের শার্টের কদর রয়েছে এবার ।
বেবী প্লাজা শপিং মলের নিউ মডেল গার্মেন্টসের সত্তাধিকারি মাসুদ পারভেজ জানান, এবার ঈদের জন্য তরুনরা জিন্স প্যান্ট আর পাঞ্জাবী কিনছেন বেশি । পাশাপাশি আমার দোকানে ছোট শিশুদের নানা ধরনের বাহারি পোশাক রয়েছে । কিরণমালা , ঝিলিক, ড্রেস বেশির ভাগ মেয়েদের পছন্দ । তিনি আরো জানান ,ছেলেদের জিন্সের প্যান্ট দেশি ১ হাজারথেকে ১৫শ টাকা , চায়না থাই ১৬শ টাকা ২৫শ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে । টি শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ২শ টাকা ১৫শ টাকা পর্যন্ত । পাঞ্জাবী ৮৫০ টাকা ৩ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে ।
পোশাক কিনতে আসা ছোট্ট শিশু ছড়ার মা নাজমুন নাহার জানান, শিশুদের পোশাকের এবার খুব দাম । পছন্দের মত ভাল পোশাক পাচ্ছি না । অনেক ঘুরে ঘুরে মডেল গার্মেন্টস থেকে একটি পোশাক কিনছি ।
এবারের ঈদে কিশোরী ,তরুনী ,নববধূ ও বাঙালী নারী পছন্দের তালিকায় রয়েছে শাড়ি । ব্যবসায়ীরা জানান, ১২ রোজার পরথেকে বিভিন্ন বয়সী নারীরা শাড়িরদোকানে ভিড় করছেন ।ক্রেতাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখে নিত্য নতুন শাড়ি আনতে হয় আমাদের । শাড়ির বাজারের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে । আগে ঈদে ভারতীয় শাড়ির কদর ছিলবেশি কিন্তু এবার ঈদে দেশি শাড়ির ব্যাপক চাহিদা হয়েছে । ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের সত্তাধিকারি তাপস অধিকারি জানান,এবারদেশি শাড়ির চাহিদাবেড়েছে । ভারতীয় শাড়ির আছে সামান্য পরিমাণে । বাংলাদেশি শাড়ির মান ও কারুকাজ ভাল হওয়াতে এখন এ শাড়ি বাইরেও যাচ্ছে । এবার জর্জেট ,নেটের জজেট শাড়ি ৪ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে । তাছাড়া ঢাকার জামদানি , টাঙ্গাইল ও তাঁতের শাড়ি ও অনেকে কিনছেন ।
বেবী প্লাজা মার্কেটের শিকদার বস্ত্রালয়ের উজ্জল শিকদার জানান, ঈদকে সামনে আমরা বরাবরই নিত্য নতুন ডিজাইনের জজেট ,কাতান , রাজশাহী স্লিক , জামদানী , ট্ঈাাইল শাড়ি এনেছি । ১৫ রোজার পর ক্রেতদের উপচে পড়া ভিড় । অন্য বারের তুলনায় বেচাকেনা খুব ভাল ।
অন্য ব্যবসায়ীরা জানান, ১২/১৫রোজার পর শাড়ী বিক্রি শুরু হয়েছে । অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বিক্রি ভাল । এ শাড়ি বিক্রি চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত । শাড়ী কিনতে আসা হাসিনা বেগম বলেন ,এবার ঈদে দেশি কিনেছি । রং , ডিজাইন ও মান ভাল হওয়াতে এ শাড়ি আমার পছন্দ ।
পাশাপাশি ঈদের পছন্দের কিনতে শহরের ফুটপাত গুলোতেও নি¤œ আয়ের মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শার্ট, প্যান্ট,বেবিড্রেস, পাঞ্জাবীসহ বিভিন্ন ধরণের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে এ দোকান গুলোতে। শহরের পাশ্ববতী আবালপুর গ্রামের অটো চালক জানান , আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। ঈদের ছেলে-মেয়েদের পোশাক কিনতে এসেছি । অন্য বারের তুলনায় এবারপোশাকের দাম অনেক বেশি । অনেক দোকান ঘুরে পছন্দের পোশাক কিনবো ভাবছি ।