আজকাল সোসাল মিডিয়ায় বিশেষ করে ইউটিউবে এক মহা উপদ্রবের সৃষ্টি হয়েছে। বহুল আলোচিত সেফুদার ” শব্দ বোমা” র চাইতেও রাবিস!! সত্যি কথা বলতে কি এত উগ্র, এত জঙ্গি, এত অশ্লীল কনটেন্ট ইউটিউব মিডিয়ায় সচারাচর দেখা যায় না। সাধারণভাবে সস্তার বিনোদনের জন্য ইউটিউব একটা জনপ্রিয় মাধ্যম। কিন্তু কতিপয় নষ্ট ভ্রষ্ট অতি বুদ্ধিমান ইউটিউবার এটার গুষ্টি উদ্ধার করে ছেড়েছে।
আজ বলছি সুদুর প্যারিসে রিফিউজি হিসাবে বসবাসরত পিনাকী ভট্টাচার্যের কথা। লোকে তাকে প্যানিক ভর্ত্তা বা প্যানিক ভূট্টো বলেই জানে। মহোদয়ের বাড়ি বগুড়া। আগে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ( সিপিবি) করতেন। পার্টি ভেঙ্গে যাবার পর তার মতিভ্রম হয়। হতাশগ্রস্থ হয়ে এদিক সেদিক ঘুরে অবশেষে চাকুরী নেন ঢাকার এক ঔষধ কোম্পানিতে। নকল ভেজাল মানহীন ঔষধ তৈরী বিক্রির অভিযোগে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। শুরু করেন সোসাল মিডিয়ায় ব্লগিং। একদিন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে ফোন করাতেই এই বীর পূঙ্গব কাপড় ভিজিয়ে ফেলেন। অবশেষে ছদ্মবেশ ধারন করে বামপন্থী গেরিলা কায়দায় দেশ ছেড়ে নানান ঘুর পথে ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেন। এখন তিনি প্যারিসে রিফিউজি হিসাবে বসবাস করছেন। চাকুরী করছেন ইসরায়েলের ইহুদী মালিকানাধীন লরেল কোম্পানিতে। বলা চলে ইহুদিদের পয়সায় তার জীবন চলে।
যাইহোক, প্যানিক ভুট্রা তো আসলে মোসাদের (ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা) এজেন্ট। মোসাদ চায় ইসলামিক দেশ গুলো যাতে চিরকাল মূর্খ্যই থেকে যায়, এরা যেন উগ্রবাদী হয়, মুসলমানদের মধ্যে যাতে কোনদিন শান্তি ফিরে না আসে, মুসলমানরা যেন বিজ্ঞান বিমূখ থাকে চিরকাল। মুসলমানরা যাতে পরস্পরের বিরুদ্ধে সারাক্ষণ সংঘর্ষে লিপ্ত থাকে এবং কোনো একটি মুসলিম দেশই যেন স্থিতিশীল না থাকে। এজন্য মোসাদ মুসলমানদের মধ্যে গৃহ বিবাদ জিইয়ে রাখে।
বাংলাদেশে মোসাদের বেতনভূক ৫৪০ জন এজেন্ট আছে। পিনাকী তার একজন। সে প্যারিসে একটা ইসরায়েলের কোম্পানিতে চাকুরী করে। একজন ইহুদি প্রফেসরের অধীনে পিএইচডি অধ্যায়ন রত।
প্যানিক ভুট্ট চটকদার, মসলাদার কন্টেন্ট বানিয়ে সোসাল মিডিয়ায় ছাড়লে গন্ড মূর্খ মুসলমানরা সেটা খুব খায়। ওদিকে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ হলে সেখান থেকেও টাকা উপার্জন হয়। কিন্তু সেই কন্টেন্টের প্রতিক্রিয়ায় একটা দেশের জনগণের মধ্যে কি ভয়ংকর অবস্থা সৃষ্টি করে সে বিষয়ে পিনাকী বা মোসাদের কিছু যায় আসে না।।
মুসলমানদের চীর শত্রু ইহুদীরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে সারা বিশ্বে মুসলমানদের এভাবেই শাস্তি দিয়ে যাচ্ছে। এই সাধারণ কথাটা বুঝবার মত জ্ঞানও নেই হতভাগ্য মুসলমানদের। আফসোস!!
বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো খবর দিয়েছে – বাংলাদেশের প্রায় ৩৫০০ মাদ্রাসা, ১৪৫ টি ইসলামীক উগ্রবাদী সংগঠন নিয়মিত ভাবে টাকা পায় মোসাদ থেকে- যাদের একমাত্র কাজই হলো ইসলামি হুকুমত বা খিলাফত কায়েমের নামে অপরাপর ইসলামিক সংস্থাগুলোর বিরোধিতা করা।
এই যে এখন আলেম ওলেমাদের, পীর বুজুর্গদের মাজার ভাঙছে, আটরশি, মাইজভান্ডারি, শর্ষিনার পীর, চর মোনাইয়ের পীর, আহলে হাদিস, আহলে সুন্নাত, তাবলীগ জামাত, হেফাজতে ইসলাম – এরা সবাই পরস্পরের ঘোরতর শত্রু।
ইহুদী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ মুসলমানদের এই পারস্পরিক বিরোধকে সুকৌশলে কাজে লাগাচ্ছে এবং ইসলামীক দেশগুলোকে ক্রমাগত উগ্রবাদী, মৌলবাদী, জঙ্গিদের অভয়ারণ্যে পরিনত করছে।
এর ফলে বাংলাদেশ সহ ইসলামিক দেশগুলো বিজ্ঞান, আবিস্কার, শিল্প,সাহিত্য, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সাংস্কৃতিক চর্চা থেকে পিছিয়ে থাকছে। আর দিন দিন এরা ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত, চীনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পরছে। এটাই ইসরায়েল তথা ইহুদীদের সাফল্য।
মোসাদ এখন হিন্দুদেরও টার্গেট করেছে। বিশেষ করে ” ইসকন” এর ভেতর ব্যপক ভাবে বিদেশি ইহুদীরা ঢুকে গেছে। ইসকনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে কোন হিন্দু বা বাঙালী নেই। আগামীতে ইসকনী হিন্দুদের মিছিলে বা ধর্মীয় র্যালীতে নাশকতা মূলক বা অন্তর্ঘাত মূলক হামলা করে ব্যপক প্রাণহানি ঘটিয়ে বাংলাদেশকে এরা ব্যর্থ রাষ্ট্র তকমা এটে দিতেই পারে।
রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যর্থ হলে জিও এর পরিবর্তে এনজিও দের দিয়ে বাংলাদেশ পরিচালনা করা ইসরায়েল, আমেরিকা, ইউরোপের জন্য সহজ হবে। তারা তো এটাই চাইছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে। লক্ষ করুন, বাংলাদেশে কিন্তু এখন এই এনজিও শাসিত সরকার ক্ষমতায়। ইসরায়েল আমেরিকার গবেষণা এবং পরীক্ষা বাংলাদেশে সফল।
বাংলাদেশ গনতান্ত্রিক উপায়ে এগিয়ে যাচ্ছিল, দেশে ব্যপক উন্নয়ন হচ্ছিলো,বাংলাদেশ স্বনির্ভর হয়ে উঠেছিল, উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তরিত হয়েছিলো- জঙ্গিবাদ,মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে দেশের জনমত প্রবল হয়ে উঠেছিলো, সামান্যতম হলেও এখানে সেক্যুলারিজমের চর্চা হচ্ছিলো, শিল্প,সাহিত্য,সাংস্কৃতিক চর্চা হচ্ছিলো – এসব ইউরোপ, আমেরিকা, ইসরাইলের পছন্দ নয়। তারা চায় বাংলাদেশ সহ সকল ইসলামিক দেশ একেকটা রিলিফ,ত্রাণ নির্ভর শরনার্থীর দেশে পরিনত হোক।
বাংলাদেশ যাতে ইরাক,সিরিয়া,লিবিয়া, লেবানন,ইয়েমেন,বুরুন্ডি,ঘানা,কঙ্গোর মত রিলিফের জন্য তাদের কাছে হাত পাতুক সারাজীবন। তারা চায় বাংলাদেশ সহ ইসলামিক দেশগুলো একেকটা আত্মমর্যাদাহীন, আত্মসম্মানহীন ভিক্ষুকের দেশ হয়েই থাকে চিরকাল।
লক্ষ করুন, বর্তমান ড: ইউনুসের সরকার সেই কাজই করছে। আমেরিকার কাছে ভিক্ষার হাত পেতে আছে। ডোনাল্ড লু মাত্র ২০ কোটি ডলার ভিক্ষা দিবে বলেছে। ২০ কোটি ডলার মানে মাত্র ২৩০০ কোটি টাকা মাত্র। আরে, এরচেয়ে বেশি টাকা ২ বছর আগে আমরা দিয়েছি শ্রীলঙ্কাকে ওদের ক্রাইসিস এর সময়। বাংলাদেশের একেকটা ছোট প্রজেক্টেও ৩/৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হতো শেখ হাসিনার আমলে। ৩ লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে রুপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র বানানো হচ্ছে। ৩৬ হাজার কোটি টাকা দিয়ে নিজস্ব তহবিল থেকে পদ্মা সেতু বানিয়েছি। এরকম ১৫/২০ টা মেগা প্রকল্প এখনও চলমান আছে। ওরা আসছে আমাদের ২০ কোটি ডলারের ভিক্ষার থলি নিয়ে।
এনজিও শাসিত ইউনুসের সরকার এই ভিক্ষা বৃত্তিতেই সন্তুষ্ট। তাদের মিশন আছে,ভিশন নেই। জনগণের কাছে কমিটমেন্ট নেই, জবাবদিহিতা নেই। সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় তাদের ব্যর্থতা সবাই দেখেছে। যাইহোক, বাংলাদেশ রাষ্ট্র টি ব্যর্থ হবে নাকি গত ১৬ বছরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবে সেটা মহাকালই বলে দেবে।
আমরা শুধু প্রার্থনা করি, এদেশের ১৬ কোটি মুসলিম বুঝতে শিখুক ইসরাইল, আমেরিকা, ইউরোপের টাকায় নিজেদের মধ্যে এই মাতৃঘাতী লড়াই যেন বন্ধ হয়। এদেশের প্রায় ২ কোটি সংখ্যালঘুদের তারা যেন সম্মান করতে শেখে। তাদের যেন নিরাপত্তা বিধান করে।
১৯৭১ সালে কিন্তু জাতি, ধর্ম,বর্ণ,গোত্র নির্বিশেষে বাঙালীরা একত্রে যুদ্ধ করেই লাল সবুজের পতাকা উড়িয়েছিলো, জাতীয় সঙ্গীত মুখে তুলে নিয়েছিলো। আজ কিছু কূপমণ্ডূক ছাত্রনেতা আর কিছু নষ্ট,ভ্রষ্ট, নাপাক,নাস্তিক,অশিষ্ট শিক্ষক বুদ্ধিজীবির কুমন্ত্রণা থেকে নিজেদের মুক্ত করে শিক্ষাঙ্গনে, লাইব্রেরিতে যেন তারা ফিরে যায়।
ছাত্র জীবন শেষ না করেই যেভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবার মোহে রাষ্ট্রিয় প্রোটকল নিয়ে সরকারি নিরাপত্তা নিয়ে সারাদেশে ঘুরে ঘুরে যেভাবে রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে তা সার্বিক বিচারে কতটুকু নৈতিক? কতটুকু যৌক্তিক? কতটুকুই বা প্রয়োজনীয়?
দেশে ডানপন্থী, উগ্রডানপন্থী, বামপন্থী, উগ্রবামপন্থী, মধ্যপন্থী,প্রগতিশীল, ইসলামিপন্থী,উগ্রবাদী ইসলামিপন্থী, উদার ইসলামি প্রায় শতাধিক রাজনৈতিক দল বিদ্যমান। নতুন করে কোন পন্থী রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন পরলো হঠাৎ? নাকি এনজিও সরকারের “জিও” হবার জন্য নিজস্ব একটা রাজনৈতিক দল দরকার?
তাহলে সেই পতিত সামরিক স্বৈরাচারী সরকার আইয়ুব, ইয়াহিয়া, জিয়াউর রহমান, এরশাদ এর মত এই এনজিও সরকারেরও খায়েশ হলো তথাকথিত “জননেতা ” হবার?
ভুলে যাবেন না, আপনাদের জনগণ খুব একটা চিনে না।। তাছাড়া, একটা নির্বাচিত সাংবিধানিক সরকারকে যে বাহানায় যে অশ্লীল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য করলেন- যুগ যুগ ধরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান,ইতিহাসের ছাত্ররা সেটা চর্চা করতে থাকবে।
আপনারা বলেন ৫ আগষ্ট -ওটা নাকি” বিপ্লব” ছিলো। কিসের বিপ্লব? কি সেই বিপ্লবী আদর্শ? সেই বিপ্লবের বক্তব্য কি? তথ্যই বা কি? বিপ্লবের মিশন কি? ভিশন কি? বিপ্লবের মহান নেতা কে? কারা এই বিপ্লবের পথনির্দেশক? এই বিপ্লবের সুফলই বা কি? তথাকথিত সেই বিপ্লবের পরিনাম,পরিনতিই বা কি?
একজন বয়োবৃদ্ধ নারী নেত্রী, জাতির জনকের কন্যা, ৪ বারের প্রধানমন্ত্রী, ১০ বারের সংসদ সদস্যা – তার বাসভবনে বে-আইনী ভাবে ঢুকে লুটপাট করে তার দেহের গোপন কাপড় চোপড় অন্তর্বাস সহ চুরি করে তা প্রকাশ্যে নিয়ে নৃত্য করা, জোর করে পদত্যাগের নাটক সাজিয়ে রাষ্ট্রিয় বিমান, হেলিকপ্টারে করে অন্যদেশে পাঠিয়ে দেয়া কতখানি আইনসম্মত, নৈতিক, যৌক্তিক, মানবিকতা সম্পন্ন হয়েছে- ইতিহাস রাষ্ট্রবিজ্ঞান তা একদিন মূল্যায়ন করবে।
সারাবিশ্বের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকগন পড়বে জানবে – কি করে একটি সাজানো গোছানো উন্নয়নশীল দেশকে কিছু পথভ্রষ্ট ছাত্র, নষ্ট-ভ্রষ্ট শিক্ষক, মতিভ্রম বুদ্ধিজীবি, মৌলবাদী জঙ্গি আর আমেরিকার মদতপুষ্ট কতিপয় এনজিও মিলে ঝুলে এক্কেবারে সর্বনাশ করে ছেড়েছে।
সারাবিশ্ব জানবে একটি দেশের জাতির পিতার মূর্তিতে কিভাবে কুকুরের মত প্রকাশ্যে প্রশ্রাব করে দিয়েছে একদল মৌলবাদী। ইতিহাসে লেখা থাকবে – দেশের ভূখন্ড আমেরিকা হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে কি করে একজন দেশপ্রেমিক প্রধানমন্ত্রী অবশেষে ভিন দেশে রিফিউজি হয়ে দিন কাটিয়েছিলেন। আরও লেখা থাকবে ১৯৭১ এর বিজয়ী বীর মুক্তিযোদ্ধারা কিভাবে ২০২৪ এ এসে পরাজিত হলেন!! কিভাবে ৭১ এর পরাজিত শক্তির প্রেতাত্মারা ২৪ এ এসে ” মহান স্বাধীনতা যোদ্ধা” হয়ে উঠলেন!!
