14rh-year-thenewse
ঢাকা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দূতাবাস কর্মচারীসহ আওয়ামী দোসরদের বিচার চাইলো ওমান প্রত্যাগতরা

SDutta
July 15, 2025 5:37 pm
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক: ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ব্যবসা ও চাকরি হারিয়ে ওমান থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসা বঞ্চিত ও নির্যাতিত কর্মজীবীরা মঙ্গলবার (১৫ জুলাই ২০২৫) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
তারা সেখানকার রাষ্ট্রদূত ও তাদের সহযোগীদের দেশে এনে বিচার দাবি করেছে। বর্তমান সরকারের কাছে তারা চার দফা দাবি পেশ করেছে। ওমান প্রবাসীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী।
সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ওমানের বাংলাদেশ দূতাবাস মাসকাট পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়। বাংলাদেশ দূতাবাস মাস্কাট, বাংলাদেশ স্কুল মাসকাট ও বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব এই তিনটি প্রতিষ্ঠান প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হলেও তাদের মাধ্যমে ও তাদের কারণে ওমানী সরকার বাংলাদেশীদের ভিসা প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। এতে একদিকে যেমন শ্রমের বাজার সংকুচিত হয়েছে অন্যদিকে, ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির মধ্যে তিক্ত সামাজিক সম্পর্ক বিরাজ করছে। যা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জন্য মর্যাদা হানিকর।

২০১৯ সালে বাংলাদেশ স্কুল জালান বানী বু আলীর প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা ও শিক্ষক মরহুম শেখ আবদুল্লাহকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাকে প্রায় তিন মাস কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। দূতাবাস থেকে তাকে কোন আইনি সহযোগিতা দেয়া হয়নি। ২০১৩ সালে একই স্কুলের সাবেক অধ্যক্ষ জনাব আজাদ সহ আরো কয়েকজন ভালো শিক্ষককে তাৎক্ষনিক আদেশে চাকরি চ্যুত করে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, মাস্কাটের শিল্প অঞ্চল মবেলার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী সলিম উল্লাহকে তার পরিবার সহ ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ সালে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তার অপরাধ সে স্কুলের সংবিধান সংশোধনের জন্য অভিভাবকদের ওয়াটস আ গ্রুপে লেখালেখি করতো। পরিবার সহ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ারের সাথে এমনকি দূতাবাসের যেকোনো কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করতে চাইলেও, কেউ তাকে দেখা দেয়নি। এখন সে দুর্বিসহ দিন কাটাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওমানের বুরাইমি প্রদেশে কর্মরত এনেসথেশিয়ার বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক ডা. সাইয়েদ মাহমুদ আলি রেজা, ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, এমরান চৌধুরী ও সাইফুল ইসলামকে ওমান ত্যাগে বাধ্য করা হয়।। তাদের অপরাধ তারা বিএনপির নামে একটা ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিল।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওমানের ইবরা হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীকে পরিবার সহ ২০২১ সালের মার্চ মাসে নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে জোরপূর্বক পাঠিয়ে দেয়া হয়। তার অপরাধ তিনি অভিভাবকদের ভোটে স্কুল পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশ

তিনি বলেন, স্কুল মাসকাট তথা বাংলাদেশের জিম্মাদার হয়ে জামিনযোগ্য মামলায় ১০ জানুয়ারি ২০২১ সালে গ্রেফতার হন। তার পক্ষে আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস মাসকাটের কোন কর্মকর্তা এগিয়ে আসেননি।
সবচেয়ে দুঃখের বিষয় তার পরিবার ও কমিউনিটির বন্ধুদের তার পক্ষে জামিন আবেদন না করার কঠোর হুশিয়ারী দেয়া হয় এবং মিথ্যা আশ্বাস ও তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে থাকে।

অবশেষে জানা যায় দূতাবাসের কর্মকর্তারাই তাকে গ্রেফতার করানোর প্লট তৈরী করেছিলো। দীর্ঘ ২৩ দিন দুঃসহ হাজত বাসের সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাস্ট্রদূত শেখ তাইয়েব সালেম আল আলায়ি ডা. সাজ্জাদকে জামিন লাভের ব্যবস্থা করেন। তিনি নাগরিকের প্রতি নিজ দেশের দূতাবাস ও এর কর্মকর্তাদের আচরণে হতভম্ব হয়ে পড়েন।

তিনি আরো বলেন, একই রকম পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাংলাদেশ স্কুল মাসকাটের ততকালীণ প্রিন্সপাল ফারজানা করিম, সোহার স্কুলের শিক্ষক আজিজুল ইসলাম ও গনিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জাহিদ হোসেন নিরাপত্তার কারনে ওমান ছাড়তে বাধ্য হন।

তিনি বলেন, মাবেলার ব্যবসায়ী সৈয়দ জাহাঙ্গির আলম ও বুরাইমির ব্যবসায়ী আজিজুর রহমানকে আগামী ২৯ জুলাই ২০২৫ এর মধ্যে ওমান ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সরকারের কাছে আমাদের আকূল আবেদন ও দাবী-
এক) ফ্যাসিবাদের দোসর ও ওমান থেকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর অন্যতম কারিগর সহ সংশ্লিষ্টদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করুন।

নিচে চক্রান্তকারীদের তালিকা দেওয়া হলো

১. সিরাজুল ইসলাম সভাপতি, বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব, ওমান ২. এম এন আমিন, সেক্রেটারি, বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব, ওমান। ৩. ইফতেখারুল হাসান চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী, গালফ এক্সচেঞ্জ, ওমান ৪. মোস্তফা কামাল পাশা, সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ওমান ৫. সবুজ শিকদার, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ওমান। ৬. মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, সভাপতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ওমান।
৭. তৌহিদুল ইসলাম, সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ওমান
৮. জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ওমান
৯. মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ওমান।

দুই)ফ্যাসিবাদী সরকারের লেসপেনসারদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ব্যবসা ও চাকরি হারিয়ে ওমান থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাগত বঞ্চিত ও নির্যাতিত প্রবাসী সহ সকল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার ওমান প্রবাসীদের চাকরী ও ব্যবসা ফিরিয়ে দাও।

নির্যাতিতদের তালিকা নিচে দেওয়া হলো
১. ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্পেশালিষ্ট শিশু বিভাগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওমান।
২. ডা. সাঈদ মোহাম্মদ আলী রেজা, সাবেক স্পেশালিস্ট, এনেসথেশিয়া, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওমান।
৩. আজিজুর রহমান, বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী, বুরাইমি, ওমান।
৪. সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, ব্যবসায়ী, মাস্কাট, ওমান। ৫. আনোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী, বুরাইমি ওমান। ৬. ইমরান চৌধুরী, ব্যবসায়ী বুরাইমি,, ওমান ৭. সাইফুল ইসলাম, ব্যবসায়ী, বুরাইমি, ওমান
৮. সলিম উল্লাহ, ব্যবসায়ী, মবেলা সেনাইয়া, মাস্কাট, ওমান ৯. ফারজানা করিম, প্রিন্সিপাল, বাংলাদেশ স্কুল মাস্কাট, ওমান। ১০. মাহবুব চৌধুরী, সাবেক সভাপতি, বিএনপি, ওমান। ১১ জাহিদ হোসেন, শিক্ষক, বাংলাদেশ স্কুল মাস্কাট, ওমান ১২. সাঈদ মোহম্মদ আনোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী, সোহার, ওমান। ১৩. আজিজুল ইসলাম, শিক্ষক, বাংলাদেশ স্কুল, সোহার ওমান। ১৪. সাঈদ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, ব্যবসায়ী, সোহার ওমান। ১৫. রিপন চৌধুরী, ব্যবসায়ী. আল ফালাজ, ওমান

তিন) রাস্ট্রদূত সেকান্দার আলী, রাস্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার, রাস্ট্রদূত মিজানুর রহমান, প্রথম সচিব আবু সাঈদ, দূতালয় প্রধান নাহিদ ইসলাম সহ বাংলাদেশ দূতাবাস মাসকাটে সেসময় কর্মরতঃ ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর ও অত্যাচারী কর্মকর্তাদের বিচার করুন।

চার) মাবেলার ব্যবসায়ী সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম ও বুরাইমির ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান ২৯ জুলাই ২০২৫ এর মধ্যে দেশে প্রত্যাবর্তন রহিত করার জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রবাসী কল্যান উপদেষ্টা মহোদয়ের সরসারি হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।

http://www.anandalokfoundation.com/