13yercelebration
ঢাকা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ধুতি পরে বা মাথায় সিঁদুর দিয়ে রাস্তায় হাটতে দেয়া যাবে না -চরমোনাই নায়েবে আমীর

Link Copied!

মুসলিম বোনেরা যদি হিজাব পরতে না পারে, কোন মুসলমান যদি ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করতে না পারে তাহলে কোন হিন্দুর পড়নে ধুতি থাকতে পারবে না, পৈতা গলায় ঝুলবে না, মাথায় সিঁদুর দিয়ে রাস্তায় হাটতে দেয়া যাবে না, এটা মুসলমানের দেশ। এদেশে কথা হিসেব করে বলতে হবে। কন্ঠ কিভাবে স্তব্ধ করে দেয়া যায় তা মুসলমানরা জানে। বলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ( চরমোনাই) সিনিয়র নায়েবে আমীর সৈয়দ মুফতি ফজলুল করীম।

১৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ঢাকার বাইতুল মোকাররম মসজিদের সামনে এক সমাবেশ থেকে ভারতের বিষয় নিয়ে এদেশের হিন্দুদের এধরণের হুমকি-ধমকি দেয় ইসলামী মৌলবাদী সংগঠন ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ( চরমোনাই) সিনিয়র নায়েবে আমীরসহ নেতৃবৃন্দ।

সিনিয়র নায়েবে আমীর সৈয়দ মুফতি ফজলুল করীম বলেন, ভারতে হিজাব নিষিদ্ধ করেছে। ইতিহাস আপনাদের জানা, মোহাম্মদ বিন কাসেম(রাঃ) ১৭ বছরের যুবক রাজা দাহিরের জলদস্যু কর্তৃক এক মুসলিম মেয়েকে অপমান করার কারণে ইরাক ইরান পাকিস্তান পাড়ি দিয়ে ম্যাকারনের পথ ধরে ভারতে ঢুকে রাজা দাহিরের এক লক্ষ সৈন্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে পাক ভারত উপমহাদেশে মুসলিম উত্থান করেছিলেন। আজকেও ভারতে মুসলিম মেয়েদের বোরকা পরে বিদ্যালয়ে যেতে দেয়া হচ্ছেনা। তারা আকুল আর্তনাদ করছে। তারা ডাকছে গোটা দুনিয়ার মুসলিম ভাইয়েরা/যুকবকরা/ মায়েরা তোমাদের রক্ত কি জমে গিয়েছে। তোমরা কি মুসলমান নও তোমরা কি মোহাম্মদ বিন কাসেমের উত্তরসূরী নও? আমরা সকল মুসলিম মিলে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ব।

তিনি আরও বলেন, ভারত বোরখা নিষিদ্ধ করেছে। সেখান থেকে ইসলামকে বিদায় দেওয়ার চক্রান্ত করছে। ব্রিটিশ এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি রক্ত দিয়েছে মুসলমান। সবচেয়ে বেশী শাহাদাত বরণ করেছে মুসলমান। ব্রিটিশরা মুসলমানদের থেকে ভারত দখল করেছে। কোন হিন্দু/খ্রিস্টানদের থেকে নয়। যেহেতু মুসলমানদের থেকে ব্রিটিশরা ভারত দখল করেছিল সেহেতু হিন্দুদের থেকে আমাদের দখল করতে হবে ইনশাল্লাহ।

কাদিয়ানীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হযরত (সাঃ) নবীর উম্মতরা জিন্দা থাকতে কাদিয়ানীরা মুসলিম জামাত হিসেবে বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। মুসলিম নামে নয় কাদিয়ানী জামাত হিসেবে থাকবে।  সরাকারি ভাবে তাদেরকে কাফের ঘোষণা দিতে হবে।  হিন্দু, খ্রিস্টানদের মতো কাদিয়ানীরা কাফের হিসেবে থাকবে।

উল্লেখ্য, ভারতে হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়নি। ধর্মীয় পোশাকাদি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করা যাবে কিনা সেটি ভারতের উচ্চ আদালত সিদ্ধান্ত নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় দিবেন। সাময়িক রায়ে ধর্মীয় পোষাকাদি নিয়ে শিক্ষা  প্রতিষ্ঠানে যাওয়া যাবে না বলে জানা যাচ্ছে। সে ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ রায় আসবে।

ভারতে কি হবে, কি হবে না? সেজন্য বাংলাদেশের মানুষের ভিন্নধর্মের কম সংখ্যায় অমুসলিমদের উপর অত্যাচার চালানোর হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে।ভারতে কোথায় কি হল এজন্য এদেশের হিন্দুদের জবাব দিতে হবে। হিন্দুদের ধারক বাহক কি ভারত? হিন্দু ধর্মের নির্দেশনা কি ভারতের কোন মন্দির থেকে আসে? ভারতে কোথায় কি হল না হল সেজন্য বাংলাদেশের হিন্দুরা কেন দায়ি থাকবে?

ইয়েমেনে প্রতিনিয়ত সৌদিআরব বিমান হামলা চালিয়ে মুসলমানদের হত্যা করছে। বাংলাদেশের মুসলমানরা কি কখনো প্রতিবাদ করেছে।

আফগানিস্তানে প্রতিদিন মুসলমানরা ক্ষুধার জ্বালায় কিডনি বিক্রি করছে, সন্তান বিক্রি করছে। একবারওকি এদেশের মুসলমানরা কথা বলেছে।

উইঘুরে চীনা কমিউনিস্টরা মুসলমান নারীদের ধরে ধরে রেফ করছে, তাদের জরায়ু কেটে দিচ্ছে যাতে সন্তান উৎপাদন করতে না পারে। মুসলমান সন্তানদের ধরে ধরে জোর জবরদস্তির মাধ্যমে তাদের মোহাম্মদকে গালাগালি দেয়া হচ্ছে। কোরআন পোড়ানো হচ্ছে, তাদের হাতে জুতোপেটা করা হচ্ছে। মুসলমানদের ঘৃণা করা শেখানো হচ্ছে। এরা একবারও কি চিনের বিরুদ্ধের কথা বলেছে? উইগুর মুসলমান নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে?

আফগানিস্তানে আফিম চাষ হয় সেই আফিম খেয়ে নেশা আসক্তরা মানুষ মানুষকে হত্যা করে মাংস খাচ্ছে। এই বিষয়ে কি কোন কথা বলেছে?

বাংলাদেশে মদ খাওয়া যাবে না। ইয়াবা যেভাবে সারা বাংলাদেশে বিক্রি হচ্ছে। ইয়াবা আসক্ত হয়ে যেভাবে যুবসমাজ ধ্বংসের পথে। এই ইয়াবা/ হেরোইন/গাঁজার এর বিরুদ্ধে কোন কথা বলেছে?

এরা হিন্দুদের দুর্বল পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের ঘোষণা দিবে। আবার অসুস্থ হলে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করাবে।

ভারতের শাসন ক্ষমতা আরবীয়ানদের হাতে ছিল।  বেশ কিছু শহর, গুরুত্বপূর্ণ জায়গা আরবীয় মুসলমানদের হাতে ছিল। আন্দোলন সংগ্রাম করে আবার দিল্লীর মসনদকে আবার উদ্ধার করব। ইনশাল্লাহ। দখল করার হুমকি দিল। মুহাম্মদ তার সময় ভারত দখলের স্বপ্ন দেখেছিল। গাজোয়া হিন্দ। ভারতে অভিযান চালাবে।

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারমে দাঁড়িয়ে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এমন অত্যাচার হুমকি দিচ্ছে। দেশের সমস্ত প্রশাসনের সামনে দাঁড়িয়ে গাজোয়া হিন্দ আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। ইসলামের সমালোচনা করলে তার ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করে দিবে। এরকম প্রতিনিয়ত হুমকিসহ ঘটনা ঘটিয়েও তাদের কোন বিচার হয়নি বলে তাদের গলা মোটা হয়েগিয়েছে। তারা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই) এর কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে যদি বাংলাদেশের যেকোন এলাকা কিংবা প্রত্যন্ত কোন এলাকা শাঁখা সিঁদুর পড়া নারীর সম্ভ্রম হানি করে, ব্রাহ্মণের পৈতা খুলে ফেলে, ধুতি খুলে ফেলে অত্যাচার চালানো হয়, তার দায় কে নিবে? রাষ্ট্র নেবে?

সংবিধান যেখানে সব নাগরিকের সমান মর্যাদা বসবাস করার অধিকার দিয়েছে, সেই অধিকার খর্ব করা/ কেড়ে নেয়ার দুঃসাহস কোন সংখ্যা গুরুর।

বাংলাদেশের ইতিহাসকে বিকৃত করা, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার মতো হুমকি দেয়া এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পায়তারা করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে মাওলানা ফায়জুল্লাহ। তার মুক্তির দাবী তুলেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। আবার যখন হিজাব বা কোন ইসলামী বিষয়ে হিন্দু ধর্মের লোক মাত্র লাইক স্টাটাস দেয় কিংবা ফেক আইডি বানিয়ে পোস্ট দিয়ে অপরাধী সাজানো হয় তখন অত্যাচার করে বাড়িঘর ভাংচুর/জ্বালিয়ে দিয়ে ডিজিটাল আইনের আওতায় গ্রেফতার করা হয়। বছরের পর বছর অন্যায় না করে বিনা বিচারে আটক রাখা হয়। অথচ ইসলামী যেকোন ব্যক্তি একের পর এক ভয়াবহ সব সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে, নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে তবুও তাদের কাউকে আইনের আওতায় আনা হয় না।

যারা এমন উস্কানিমূলক কথা বলে যাচ্ছে তাদের দেশে রাখা হোক আর সমস্ত হিন্দুদের জেলে পুড়ে দিক না হয় দেশ থেকে বাহির করে দিক। উদ্বাস্তু হয়ে যদি নিজের দেশে থাকতে হয় তার চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে?

http://www.anandalokfoundation.com/