13yercelebration
ঢাকা

ধর্ষকদের সুরক্ষা ও নাম গোপন করায় প্রশ্নের মুখে ভারতের সংবিধান

Ovi Pandey
January 24, 2020 9:22 am
Link Copied!

দেবাশীষ মুখার্জী (কূটনৈতিক প্রতিবেদক) :  নির্ভয়াকাণ্ডের কথিত নাবালক জ‍্যোতি সিংয়ের প্রজনন অঙ্গে মরিচাধরা লোহার রড ঢুকিয়ে দেয় এবং  প্রত‍্যঙ্গটি ছিড়ে আনে যার প্রতিক্রিয়ায়  মর্মান্তিক  মৃত্যু হয় নির্ভয়ার। ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী কোন অভিযুক্তকে শাস্তি দেওয়া যায় না। এই অজুহাত দেখিয়ে এই পৈশাচিক ধর্ষককে সাজা থেকে বাদ দেয়া হয়। কোন অদৃশ্য কারনে ধর্ষককে বিশেষভাবে সুরক্ষা দেয়া সহ তার নামও গোপন করে কংগ্রেস সরকার  যা নিয়ে আজ প্রশ্নের মুখে ভারতের সংবিধান।

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর। দক্ষিণ দিল্লিতে একটি যাত্রীবাহী বাসের মধ্যে ৬ জন নরপিশাচ মিলে, নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করে ২৩ বছর বয়সী এক মেডিকেল ছাত্রীকে। ঐ ঘটনার ১৩ দিন পরে, সরকারি খরচে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হতোদরিদ্র পরিবারের ঐ মেধাবী সম্ভবনাময় মেয়েটির জীবনের করুণ পরিসমাপ্তি ঘটে। যা বিশ্বব‍্যাপী ‘নির্ভয়াকাণ্ড’ নামে পরিচিত। হতভাগিনির মা জানায়, নির্ভয়ার প্রকৃত নাম ‘জ‍্যোতি সিং’। ঐ নির্মম ধর্ষণ ও হত‍্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব‍্যাপক গণআন্দোলন গড়ে ওঠে। গ্রেফতার করা হয় ৬ জন অভিযুক্তকে।

একজন অভিযুক্ত কারাগারে আত্মহত্যা করে ; চারজন অভিযুক্ত, ফাঁসির অপেক্ষা করছে। একজন অভিযুক্তের নাম গোপন রাখা হয়। বলা হয়, ঐ অভিযুক্তের প্রকৃত নাম প্রকাশ পেলে,(আলালের দুলাল) ছেলেটি গণরোষের শিকার হতে পারে। বিশেষ ভাবে প্রমাণ করা হয় – ঐ অভিযুক্ত নাবালক ; তার বয়স ১৭ বছর ৬ মাস। প্রত‍্যক্ষদর্শীদের বিবরণ ও কথিত নাবালকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আদালতে প্রমাণিত হয়, ঐ কথিত নাবালকের পৈশাচিক নির্যাতনের কারণেই জ‍্যোতি সিংয়ের মৃত্যু ঘটে। জ‍্যোতি সিংকে ধর্ষণ করার পর, কথিত সেই নাবালক – মেয়েটির প্রজনন অঙ্গে একটি লোহার রড ঢুকিয়ে দিয়ে বর্ণনাতীত অত‍্যাচার চালায় এবং একটি প্রত‍্যঙ্গ ভেতর থেকে ছিড়ে আনে। ভারত ও সিঙ্গাপুরের বিজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ অভিন্ন অভিমত ব‍্যক্ত করেন যে, ঐ কথিত নাবালক কর্তৃক জ‍্যোতি সিংয়ের প্রজনন অঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া মরিচাধরা বিষাক্ত লোহার রড থেকে, মেয়েটির শরীরে যে ভয়াবহ জীবাণু সংক্রমণ ঘটে এবং অভ‍্যন্তর থেকে যে প্রত‍্যঙ্গটি ছিড়ে আনে – তার প্রতিক্রিয়া-ঘটিত মর্মান্তিক ধকল সামলাতে না পেরে,জ‍্যোতি সিংকে মৃত্যুবরন করতে হয়েছে।

ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী কোন অভিযুক্তকে শাস্তি দেওয়া যায় না। ঐ কথিত নাবালক অভিযুক্তকে কারাগারে না রেখে, কিশোর সংশোধনাগারে রাখা হয় এবং ভারতীয় আইন অনুযায়ী ১০ হাজার নগদ টাকা ও একটি সেলাই মেশিন দিয়ে,ঐ প্রধান ধর্ষক ও খুনিকে গোপনে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, ঐ কথিত নাবালক অভিযুক্তের নাম কেন প্রকাশ করা হলো না ; আর ঐ জঘন্য ধর্ষককে কঠোর গোপনীয়তায় বিশেষ সুরক্ষা দেওয়া হলো কেন ?

নিরপেক্ষ মিডিয়া আদালত চত্বর থেকে কথিত নাবালক ধর্ষক তথা খুনিটির ফটো তোলে এবং ঐ ফটোর সূত্র ধরে, ধর্ষকের প্রকৃত পরিচয় বের করে আনে যে, তার নাম মহম্মদ আফরোজ রাজু। স্মরণ করা যেতে পারে, ঐ সময় ভারতের কেন্দ্রীয় শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল, ইতালিয়ান খ্রীষ্টান সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বাধীন উগ্র সাম্প্রদায়িক – সেক‍্যুলার নামধারী আরবমুখী কংগ্রেস সরকার এবং প্রধান বিচারপতি ছিলেন সেক‍্যুলারিজমের স্বর্গভূমি কোলকাতার বাসিন্দা আলতামাস কবির।

আলতামাস কবিরের পিতা জাহাঙ্গীর কবির, পূর্ব বঙ্গের ফরিদপুর জেলা থেকে কোলকাতায় স্থানান্তরিত হয়ে, মূখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় ও প্রফুল্ল চন্দ্র সেন মন্ত্রীসভার সদস‍্যপদ অলংকৃত করে, সেক‍্যুলারিজমের অমিয়তত্ত্ব প্রচার করে, ভারত রাষ্ট্রটিকে হিন্দু-বিদ্বেষী ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিনত করতে সমর্থ হয়েছিলেন ; পাশাপাশি জাহাঙ্গীর কবির সাহেবদের মতো মহানুভব ব‍্যক্তিরা, আড়ালে-অবডালে স্বজাতির মধ্যে মুচকি হাসি দিয়ে বলে বেড়াতেন, ‘ভারতের হিন্দুদের মতো বোকামি যেন জন্মভূমি পাকিস্তান না করে ; যে কোন মূল্যে পাকিস্তানকে নির্ভেজাল ইসলামী রাষ্ট্রে পরিনত করতে হবে – তাহলে কোন একদিন পাকিস্তানের পক্ষে সম্ভব হবে পুরো ভারত রাষ্ট্রটিকে গিলে খাওয়া।’

কাজে কাজেই নরাধম ধর্ষক ও প্রকৃত খুনি মহম্মদ আফরোজ রাজুকে রক্ষা করতে, পর্দার অন্তরাল থেকে কোন সেক‍্যুলার অপশক্তি কলকাঠি নেড়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। তৎকালীন দণ্ডমুণ্ডের হর্তা-কর্তা-বিধাতারা বললো, ঐ খুনি ও ধর্ষকের নাম মহম্মদ আফরোজ রাজু – ঠিক আছে ; তবে আদালত চত্বর থেকে তোলা ফটোটি মহম্মদ আফরোজের নয় ; কারণ ঐ ফটোটি দেখলে মনে হয় না যে, মহম্মদ আফরোজ নাবালক। অথচ ঐ ফটোর সূত্র ধরেই খুনি ও ধর্ষক মহম্মদ আফরোজের প্রকৃত পরিচয় বের হয়ে আসে।

অভিজ্ঞ মহলের অভিমত হচ্ছে যে, মহম্মদ আফরোজের পৈশাচিক নির্যাতনে নির্ভয়া নামে খ‍্যাত জ‍্যোতি সিংয়ের মৃত্যু হয়, সেই নরপিশাচ মহম্মদ আফরোজকে শাস্তি প্রদান না করে, ধর্মনিরপেক্ষতার ছত্রছায়ায় পুরস্কৃত করে – অভিযোগ থেকে নিস্কৃতি দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, আরো অগনিত মহম্মদ আফরোজদের আমন্ত্রণ জানাবে – সমস্ত মেধাবী-সম্ভাবনাময় জ‍্যোতি সিংদের উপর বিকৃত যৌন লালসা চরিতার্থ করে, ভারতভূমি নারীশূন‍্য করে ফেলতে।

চারজন ধর্ষকের শীঘ্রই ফাঁসি হতে চলেছে, খুব ভালো কথা। ওদের মতো ঘৃণ্য ধর্ষকের মৃত‍্যুদণ্ডই যথাযোগ্য শাস্তি। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, যে মহম্মদ আফরোজের বর্বরোচিত নির্যাতনে জ‍্যোতি সিং মারা গেলো, সেই ইতর খুনি ও ধর্ষক মহম্মদ আফরোজের নামটি ভারতের সেক‍্যুলার মিডিয়া আড়াল করে ফেলেছে। যে মহম্মদ আফরোজ ঐ ধরনের কল্পনাতীত যৌন নির্যাতন চালিয়ে একজন তরতাজা তরুণীকে মেরে ফেলতে পারে, সেই মহম্মদ আফরোজ কি ভাবে নাবালক হয়! শাস্তির আওতায় আসার বয়স থেকে মাত্র ৬ মাস বয়স কম দেখিয়ে, প্রধান ধর্ষক ও মূল খুনি মহম্মদ আফরোজকে শাস্তি না দিয়ে পুরস্কৃত করায়, জ‍্যোতি সিংয়ের বিদেহী আত্মা কিছুতেই শান্তি পাবে না।

আমরা যদি ভারতবর্ষের ইতিহাসের পাতা উল্টাই, তাহলে প্রতিটি পৃষ্ঠায় দেখা যাবে, বিগত হাজার বছর ধরে মহম্মদ আফরোজরা অকথ্য যৌন নির্যাতন চালিয়ে অগনিত জ‍্যোতি সিংদের হত্যা করেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার অজুহাত দেখিয়ে ভারতের সেক‍্যুলার শাসকগোষ্ঠী , সেই নিষ্ঠুর ইতিহাস পাঠ‍্যসূচিতে নিষিদ্ধ করে রেখেছে। বিষয়টি এরকম যে, ভারত ভূমিতে মহম্মদ আফরোজদের জন্ম হয়েছে, জ‍্যোতি সিংদের উপর যথেচ্ছ যৌন নির্যাতন চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ; পক্ষান্তরে জ‍্যোতি সিংদের জন্ম হয়েছে, মহম্মদ আফরোজদের মতো প্রশিক্ষিত উগ্রমতবাদী কর্তৃক পাশবিক ভাবে যৌন-নির্যাতিত হয়ে, মৃত্যুমুখে পতিত হওয়ার উদ্দেশ্যে।

ভাগ‍্যের নির্মম পরিহাস এটাই যে, মহম্মদ আফরোজদের মতো ভোজনরসিকদের হালাল খাদ্য হচ্ছে, জ‍্যোতি সিংরা। জ‍্যোতি সিংদের পক্ষ নিয়ে কেউ যদি ন‍্যায‍্য বিচার প্রার্থনা করে,তাহলে সাম্প্রদায়িকতার আভিযোগ এনে, মুখ চেপে ধরা হয়। আচ্ছা চিন্তা করে দেখুন তো,পাকিস্তানে যদি মহম্মদ আফরোজের মতো কোন সংখ্যালঘু হিন্দু যুবক কর্তৃক, কোন মুসলিম নারী ওভাবে নির্যাতিত হয়ে মৃত্যু বরন করতো, তাহলে সমগ্ৰ মুসলিম বিশ্বে কতবড় তুফান উঠতো! ভারতে কি কোন হিন্দু সংগঠন টু শব্দটিও করছে ? কেন করবে ! একটি ছাগলের সামনে আরেকটি ছাগলকে যখন জবাই করা হয়, তখন জীবিত ছাগলটি বোঝে না যে, কিছুক্ষণ পরে তার পরিনতিও ঐ নিহত ছাগলটির মতো ঘটতে চলছে। হিন্দু জাতির অবস্থাও তদ্রুপ। আজ আপনি জ‍্যোতি সিংয়ের মূল ঘাতক মহম্মদ আফরোজের বিচার দাবী না করে নিশ্চুপ আছেন, কাল যখন ঐ মহম্মদ আফরোজ আপনার মেয়ে বা বোনকে পথে-ঘাটে টার্গেট করবে, তখন কিন্তু আপনি হাড়ে হাড়ে টের পাবেন, মহম্মদ আফরোজদের মানবতাবিরোধী অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি কেন প্রয়োজন।

ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ আইন – নির্যাতিতা জ‍্যোতি সিংদের রক্ষা করতে পারে না ; অথচ সুরক্ষা দেয় – মহম্মদ আফরোজদের মতো খুনি-ধর্ষকদের। এই ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয় শাসনতন্ত্র, মহম্মদ আফরোজদের অনন্তকাল আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাবে ; আর আপনার-আমার ঘরের মাতা-কন‍্যা-ভগিনীরা, অসহায় ভাবে পরিনত হবে তাদের ভোগের সামগ্রীতে। সুতরাং প্রতিটি হিন্দুকে উপলব্ধি করতে হবে যে, ধর্মনিরপেক্ষতা হচ্ছে হিন্দু জাতির প্রধান মরণ-ফাঁদ। মহম্মদ আফরোজদের বিচারের আওতায় আনতে, ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ শাসনতন্ত্র বাতিল করা অত‍্যাবশ‍্যক।

http://www.anandalokfoundation.com/