মাদারীপুর প্রতিনিধি ঃ মাদারীপুরের কালকিনি স¦াধীনতা ও জাতীয় দিবসে উপজেলা প্রশাসন ও আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের দ্বন্দে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে এমপির পক্ষে পুষ্পাস্তপক অর্পণ করল শুধু প্রশাসন, ছিল না কোন আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মিরা। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর তঞ্চঙ্গা বলেন, তারাতো বিগত দিনেও উপজেলা প্রশাসনের সাথে ফুল দেয়নি। যা হবার তো হয়েই গেছে। এখনতো আর ফুল দেয়া যাবে না। তারা আমার সাথে আলোচনা করলো না কেন। কালকনি উপজেলা আওয়ামীলীগ কেন পুস্পস্তপক অর্পন করল না সে ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসন জানিয়েছে স্বাধীনতা দিবসসহ জাতীয় কর্মসূচীগুলোতে সকলের অংশ গ্রহনেই হওয়ার কথা ছিল। বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখি এমন ঘটনা কেন ঘটলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে মাদারীপুর -০৩ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সোবাহন(গোলাপ) এমপি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা তাহমিনা সিদ্দিকা ও কালকিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির পক্ষে পুষ্পাস্তপক অর্পণ করছে শুধু কালকিনি উপজেলা প্রশাসন, ছিল না আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মিরা। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আজ শনিবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন য়ে দাওয়াত কার্ড স্থানীয় সংসদ সদস্যে নাম না দিয়ে ছাপানো হয় বলে জানা যায়। পরে সংশোধন করে নতুন দাওয়াত কার্ড ছাপানো হয় এমপির নাম দিয়ে। পৌরসভার মেয়র পৌরসভার পক্ষে ও উপজেলার চেয়ারম্যানকে উপজেলার পক্ষ থেকে ফুল দেয় উপজেলা প্রশাসনের পরে। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা জানায় বিগত জাতীয় কর্মসূচীতেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের বাদ দিয়েই ফুল দিয়েছেন। সমন্বয় না করার পাল্টা অভিযোগ রয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর তঞ্চঙ্গার। এ সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার বলে মনে করেন সচেতনমহল ও আওয়ামীলীগের প্রবীন নেতারা।
আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ লোকমান সরদার বলেন, স্বাধীনতা দিবসে মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও মহিলা আসনের এমপির পক্ষে কালকিনি উপজেলা প্রশাসন নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর তঞ্চঙ্গা যে পুস্প মাল্য অপর্ণ করেছেন সেটা সে পারেনা। কারণ আওয়মীলীগের সাথে কোন সমন্বয় না করে তিনি এই কাজটি করেছেন। তাই আমাদের মনে ক্ষোভ আওয়ামীলীগকে বাদ দিয়ে তিনি কিভাবে এমপির পুস্পমাল্য অর্পণ করলেন।
আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে উপজেলা প্রশাসন এমপির পক্ষে আওয়ামীলীগ ছাড়া পুস্প মাল্য অর্পণ করেছেন সেটা যেমন ঠিক করেনি তেমনি স¦াধীনতা ও জাতীয় দিবসে আওয়ামীলীগ আসেনি সেটাও ঠিক করেনি। সবার সম্বন্বয়ে এ দিনটি পালন করা উচিৎ।
কালকিনি পৌরসভার মেয়র এস এম হানিফ বলেন, কালকিনি উপজেলা প্রশাসন এমপির পক্ষে উপজেলা আওয়ামীলী ছাড়া পুস্প মাল্য অর্পণ করে ঠিক করেনি। আমারা পার্টি অফিসে ছিলাম ইউ এনও আমাদের একটা ফোন করতে পারতো বা ৫ মিনিট দেরি করতে পারতো। ইউএনও প্রথমে যে দাওয়াত কার্ড করেছেন সেই কার্ডে এমপি নামই তিনি দেননি। পরে আবার নতুন করে এমপিকে প্রধান অতিথি করে দাওয়াত কার্ড করেছেন। ইউএনও প্রত্যেক বার এই সমস্যা করেন। তাই আমরা এইবার ওনার সাথে বসবো যে আসলে তিনি ঠিক কি করেতে চান।
কালকিনি উপজেলা প্রশাসন নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর তঞ্চঙ্গা বলেন, তারা বিগত দিনেও উপজেলা প্রশাসনের সাথে ফুল দিতে আসেনি। তারা বিষয়টি আমাকে জানাতে পারতো। যা হবার তো হয়েই গেছে। এখনতো আর ফুল দেয়া যাবে না।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড.রহিমা খাতুন বলেন, জাতীয় দিবসগুলো সকলের অংশগ্রহণে হওয়ার কথা। বিষয়টি আমি জানিনা। আমি বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখি কেন এমন ঘটলো।
এব্যাপারে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ও কালকিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপিকা তাহমিনা সিদ্দিকি বলেন, আমার কয়েকদিন আগে অপারেশন হয়েছে। আমি এখনও হাসপাতালে আছি। তবে এ বিষয়ে আমার সাথে কেউ এখনও কোন আলোচনা করেনি। আমি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে বিস্তারিত জানতে পারবো।
এ বিষয়ে কথা বলতে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুস সোবাহান মিয়ার সাথে কথা বলতে তার হাতে থাকা মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি কল রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।