14rh-year-thenewse
ঢাকা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শরীয়তপুরে যে মন্দিরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি

admin
September 23, 2016 8:26 pm
Link Copied!

সৈকত দত্ত, শরীয়তপুর থেকে: পদ্মা মেঘনা আর আড়িয়ালখাঁর নরম পলিতে গড়া, হাজী শরীয়তুল্লাহর পূণ্য নামে ধন্য, প্রাচীন ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ একটি জেলার নাম শরীয়তপুর। চার পাশে নদী দ্বারা বেষ্টিত হওয়ার ফলে রাজধানী ঢাকার অতি নিকটবর্তী জেলা হওয়া সত্ত্বেও অউন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এই জেলার মানুষের জীবন মান পশ্চাৎ পদতার আবর্তেই রয়ে গেছে দীর্ঘকাল। এই জেলার মানুষেরা অধিকাংশই দরিদ্র। এ কথা সত্যি যে, মানুষের সামাজিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষাগত উন্নয়ন-অনুন্নয়ন অর্থনৈতিক কর্মকান্ড দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ এর পরে ভারত উপমহাদেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়। একটি নাম হিন্দুস্তান ও আরেকটি পাকিস্তান। আবার পাকিস্তার দুই ভাগে ভাগ হয় একটি হলো পূর্ব পাকিস্তান ও আরেকটি পশ্চিম পাকিস্তান। তখন মাদারীপুর মহকুমার পালংয়ের অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক পরিবার হিন্দুস্তানে পাড়ি জমায়। এছাড়াও পর্যায়ে ক্রমে দেশ স্বাধীনতার পর পর পালংয়ের অনেক হিন্দু শাসক গোষ্ঠি পাড়ি জমায় হিন্দুস্তানে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার আনুমানিক ৪০ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয় শরীয়তপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে কাশাভোগ গ্রাম শ্রী শ্রী বাড়ৈ পাড়া সার্বজনিন দূর্গা মন্দির। কালের বির্বতনে কমতে থাকে কাশাভোগ গ্রামে হিন্দু পরিবার। যে গ্রামে ছিল হিন্দু ধর্মালম্বীদের পূজা অর্চনায় মুখরীত সেই গ্রামে এখন পূজা অর্চনা হয় শিমশাম নিরবতায়। ৮০ বছরের পুরনো মন্দির নিজ অর্থায়নে ভিটি মাটিতে দাড় করিয়েছে গ্রাম বাসী। এলাকার অধিকাংশ পরিবারের আয় পানের ব্যবসা। নদী পাড়ে পানের ব্যবসা হওয়ায় বর্ষা কালে পানি ও সামান্য ঝড় হলেই আয়ের অধিকাংশ সম্পদ নিয়ে টান মারে। অনেক সময় নিজের খাবার জোগাড় হয় টেনে হেচড়ে সেখানে আবার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নতি। শরীয়তপুর পৌরসভার অন্তভূক্ত হওয়া পরেও গ্রামটিতে নেই কোন উল্লেখ্য যোগ্য উন্নতির ছোয়া। গ্রামে ২’শ পরিবারে জন্য রয়েছে তিনটি গভীর নলকূপ, তাও ব্যক্তিগত।

গ্রাম থেকে পরিবার গুলো হিন্দুস্তানে পাড়ি দেওয়ায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। মন্দিরের নামে সরকারী বরাদ্দ আসলেও শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় মন্দির থেকে তা আর পৌঁছায় না বাড়ৈ পাড়া মন্দিরে। গ্রামবাসীর অভিযোগ আর কত দিন পার হলে সরকারী/বেসরকারী আর্থিক সহযোগীতায় সুন্দর করে দাড় করাতে পারবো আমাদের প্রাণের প্রিয় এই মন্দিরটিকে। হাসি মুখে পালন করতে পারবো আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান গুলো? মন্দিরে নেই একটি গভীর নলকূপ। বছরে অনেক অনুষ্ঠান হয় এই মন্দিরে কিন্তু এক কলস বিশুদ্ধ পানি আনতে যেতে হয় অনেক দূর।

শরীয়তপুর পৌরসভা ও সদর উপজেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর অনেক বার পাল্টেছে পৌর পিতা এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। নির্বাচন এলেই অনেকে বলে নির্বাচিত হলে এই এলাকার রাস্তাঘাট, গভীর নলকূপ ও শত বছরের পুরনো এই মন্দিরটিকে আলোক উজ্জ্বল করে তুলবো। কিন্তু গ্রামবাসী দুখের সাথে বলে নির্বাচন আসলেই এটা দিব ওটা দিবো শাসন ক্ষমতা পেলে কেউ খবর রাখে না।

কাশাভোগ গ্রামের শ্রী শ্রী বাড়ৈ পাড়া সার্বজনিন দূর্গা মন্দিরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দিপক কর জানান, দীর্ঘ দিন আমার বাবা এই মন্দিরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। গত কয়েক বছর যাবত আমি দায়িত্ব পালন করছি। অনেক কষ্ট করে অনুষ্ঠান পরিচালনা করি। মন্দিরের উন্নয়নে স্বার্থে সমাজের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

http://www.anandalokfoundation.com/