আবু নাসের হুসাইন, স্টাফ রিপোর্টারঃ যতই দিন যাচ্ছে ততই জমে উঠছে ফরিদপুর ২, (নগরকান্দা ও সালথা) আসনের নির্বাচনী প্রচার ও প্রচারনা। আওয়ামীলীগের হাই কমান্ড এর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবী করেছে, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নিজ নির্বাচনী এলাকা ধরে রাখার লক্ষে তার বড় ছেলে স্থানীয় আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাদের চরম আতঙ্ক আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলুকে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা কম রয়েছে। এই বিষয়টি জানার পরেই পুরোদমে মাঠে নেমেছেন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক প্রার্থী। এদের মধ্যে এ্যাড. জামাল হোসেন অন্যতম।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের হয়ে মাঠে রয়েছেন মেজর (অবঃ) আতমা হালীম, সংসদ উপনেতার পুত্র আয়মন আকবার চৌধুরী বাবলূ, একই পথে হাটছেন নগরকান্দা সালথার সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জুয়েল। আর এসব প্রার্থীদের চেয়ে প্রচারনায় এগিয়ে রয়েছেন- বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের পরিচালক, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, তরুন সমাজ সেবক এ্যাড. জামাল হোসেন মিয়া। ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে তার আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু । আওয়ামীলীগের রাজনীতি শুরু করার পর থেকেই নগরকান্দা ও সালথা এলাকায় দলকে সুসংগঠিত করার জন্য কাজ করে আসছেন জামাল হোসেন। সাজেদা চৌধুরী একজন অবিসংবাদিত নেতা ফলে তার বর্তমানে সেখানে অন্য কোন নেতা মনোনয়ন চাওয়ার ধৃষ্টতা দেখাতে পারেননি বিগত দিনে। কিন্তু সাজেদা চৌধুরী বর্তমানে বারধক্যজনিত কারণে তার জায়গায় স্থলাভিসিক্ত হবার আশা ব্যাক্ত করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় যুবলীগের অন্যতম সদস্য এ্যাড. জামাল হোসেন মিয়া, মেজর অবঃ আতম হালিম এবং জুয়েল চৌধুরী। বর্তমানে সাজেদা চৌধুরীর ছেলে আয়মান আকবর চৌধুরী বাবলু এলাকায় চরমভাবে কোনঠাসা হয়ে পড়ায় উল্লেখিত তিন নেতা তাদের অনুসারীদের নিয়ে আগাম নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা সামাজিক কাজকর্ম অনুদান ও কম ভাগ্যবান মানুষের সহযোগিতায় হাত বাড়াচ্ছেন। যদিও সাজেদা চৌধুরীর ছেলে আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলু নগরকান্দা ও সালথায় গত ৯ বছর এককভাবে নির্যাতনের দৃষ্টান্ত স্থাপন না করতেন তবে তার এই আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল বলে অনেকেই মনে করেন। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চান এ্যাড. জামাল হোসেন মিয়া। তার বক্তব্য ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দায় আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা কর্মীর অভাব নেই যে, চট্রগ্রাম থেকে ভাড়া করে এনে আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলুর মত একজন আপত্তিকর বিতর্কিত এবং স্থানীয় আওয়ামীরীগের নেতা কর্মীদের আতঙ্ক আয়মন আকবর চৌধুরীকে মনোনয়ন দিতে হবে। এই এলাকার কোন সাধারণ মানুষও ভাড়াটিয়া প্রার্থীকে মেনে নেবেন না বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে জামাল হোসেন এখন একটি ফ্যাক্টর। জামাল হোসেন ১৯৯৩ সালে নগরকান্দা থানার তালমা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে প্রথম রাজনীতি শুরু করেন। পরের বছর তিনি একই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে দক্ষিন বঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্রলীগ শাখার যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। পরে ১৯৯৮ সালে ছাত্রলীগের প্যানেলে সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদেরে এজিএস নির্বাচিত হন। ২০০০ সালে একই প্যানেলে সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস নির্বাচিত হয়। তিনি ২০০১ সালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। জামাল মিয়া ২০০৮ সাল থেকে ১১ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপির এপিএস হিসাবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১১ সালে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দলের কাজ করে আসছেন। এরমধ্যে ২০১৫ সালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদ হিসাবে জামাল মিয়া জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন পরিচালনা করেছিলেন। ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্টপুত্র শেখ রাসেল এর নামে প্রতিষ্ঠিত “ শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের” পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন।
তবে এ্যাড. জামাল হোসেন মিয়া দৃঢ়তার সাথে বলেন, যদি তিনি কোন কারনে আওয়ামীলীগে থেকে মনোনয়ন না পান তবে তার আদর্শের দল থেকে যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক না কেন তিনি তার পক্ষে কাজ করবেন এবং সেই প্রার্থীকে নির্বাচিত করার জন্য যা কিছু করার আছে তার সব কিছুই তিনি করবেন। কারন হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন,“ ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়”। তার উর্ধ্বে কিছু থাকতে পারে বলে জামাল হোসেন মনে করেন না |