মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: এক সময় এ রাজ্যে ছিলে রাজা, রাজ্য ও রাজা রক্ষায় ছিল সৈন্যবাহিনী। রাজপ্রাসাদ রক্ষার জন্য চারপাশে খনন করা হয়েছিল পরিখা। কিন্তু সেই প্রাসাদে রাজা নেই, রাজ্যও নেই।রাজা বাঁচার জন্য নদীর সঙ্গে সংযোগ করে তৈরি করেছিলেন সুড়ঙ্গ। কিন্তু সেটিও মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।
ঝিনাইদহের সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নে নলডাঙ্গা গ্রামে এখন কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে রাজা বাহাদুর প্রথম ভূষণ দেবরায় রাজার ৭টি সুদৃশ্য মন্দির। প্রকৃতপক্ষে এই নলডাঙ্গা রাজপ্রাসাদ আর রাজবংশের ইতিহাস কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে পাকিস্থান আমলেই।
এখন রাজার স্মৃতি হিসেবে এই মন্দিরগুলোই রয়েছে পাশাপাশি। জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও কালীগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তরে এই প্রাচীন রাজবাড়ির অবস্থান।
পাকিস্তান আমলেই এ রাজবাড়ি কালের গর্ভে বিলীন হলেও বেগবতি নদীর ধারে বহুকাল ধরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে কালীমাতা মন্দির, লক্ষী মন্দির, গণেশ মন্দির, দুর্গা মন্দির, তারামনি মন্দির, বিষ্ণু মন্দির, রাজেশ্বরী মন্দিরসহ সুদৃশ্য ৭টি মন্দির।
মন্দির সংস্কার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী প্রশান্ত অধিকারী জানান, মূলত তার ভাই অতুল অধিকারী ২০০৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় দানশীল ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে পাওয়া প্রায় দেড় কাটি টাকা ব্যয়ে রাজার ৪টি মন্দিরগুলো সংস্কার করা হয়। ১টি মন্দির সংস্কার অর্ধেক হয়েছে ২য় তলার কাজ পুরো বাকি। আর বাকি ২টি মন্দির এখনো সংস্কার করা যায়নি। প্রতিদিন অনেকেই দেশ-বিদেশ থেকে এই রাজবাড়ি দেখতে আসেন। স্থানীয়দের ভাষায় এটি নলডাঙ্গা মঠ বা নলডাঙ্গা রাজবাড়ি বলে পরিচিত।
প্রশান্ত অধিকারী আরো জানান, স্থানীয় লোকজন নিজেদের টাকায় ১৬৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত শ্রী শ্রী সিদ্ধেশরী মায়ের মন্দিরসহ কালীমাতা মন্দির, লক্ষী মন্দির, তারা মন্দির, দ্বিতল বিশিষ্ট বিষ্ণু মন্দির সংস্কার করেন।