13yercelebration
ঢাকা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দেশের ৯.৬ ভাগ মানুষ প্রতিবন্ধী ধরণের বধিরতায় ভোগেন -বিএসএমএমইউ উপাচার্য

Rai Kishori
March 3, 2020 7:16 pm
Link Copied!

দেশের ৯.৬ ভাগ মানুষ প্রতিবন্ধী ধরণের বধিরতায় ভোগেন। বধিরতার হার কমাতে প্রতিরোধই প্রধান উপায়। ৪৩৭ শ্রবণ প্রতিবন্ধীর অত্যন্ত ব্যয়বহুল কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট সার্জারি বিনামূল্যে সম্পন্ন। বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লকের সামনে বটতলায় আজ মঙ্গলবার ৩ মার্চ ২০২০ইং তারিখ সকাল ৯টায় বিশ্ব শ্রবণ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব অটোলজী এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জনসচেতনতামূলক র‌্যালি পূর্ব আয়োজিত সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বধিরতা বাংলাদেশের একটি বড় ধরণের জনস্বাস্থ্য সমস্যা। দেশের ৯.৬ ভাগ মানুষ প্রতিবন্ধী ধরণের বধিরতায় ভোগেন। বধিরতা হার কমিয়ে আনার জন্য প্রতিরোধেই মূল উপায়। প্রতিরোধের জন্য জনসচেতনা সৃষ্টির বিকল্প নাই। এছাড়াও বধিরতা দ্রুত নির্ণয় করে চিকিৎসা প্রদান ও পুনর্বাসন করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বধিরতা নির্ণয়, চিকিৎসা প্রদান ও পুনর্বাসনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ২০১০ সাল থেকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় চালু আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত ৪৩৭ জন সম্পূর্ণ বধির শিশু ও ব্যক্তিকে অত্যন্ত ব্যয়বহুল কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট সার্জারি সেবা কার্যক্রম সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট সার্জারি করা হয়েছে। যাঁদের প্রায় সকলেই শিশু। এসকল বধির শিশু ও ব্যক্তিরা কানে শুনতে ও কথা বলতে পারছে।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ সোসাইটি অব অটোলজী এর সভাপতি ও অত্র বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালক (পরিদর্শন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল হাসনাত জোয়ারদার, অটোল্যারিংগোলজি হেড নেক সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদার, অধ্যাপক ডা. মোঃ মনজরুল আলম, অধ্যাপক এ এইচএম জহুরুল হক সাচ্চু, অধ্যাপক ডা. নাসিমা আখতার, অধ্যাপক ডা. এ আল্লাম চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানু লাল সাহা প্রমুখসহ উক্ত বিভাগের শিক্ষক, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী ও নার্সবৃন্দ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া প্রধান অতিথি হিসেবে র‌্যালির শুভ উদ্বোধন করার পর জনসচেতনতামূলক র‌্যালিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অংশ প্রদক্ষিণ করে। “শ্রবণ জীবনের জন্য” প্রতিপাদ্য নিয়ে ও “কানে কম শোনার জন্যে জীবনকে সীমাবদ্ধ হতে দেবেন না” আয়োজিত থিমকে ধারণ করে র‌্যালি শেষে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ব্লকের মাল্টিপারপাস হলে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ সোসাইটি অব অটোলজী এর সভাপতি ও অত্র বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালক (পরিদর্শন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল হাসনাত জোয়ারদার বলেন, বধিরতা প্রতিরোধের জন্য শব্দ দুষণ হ্রাস করা, রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়দের মধ্যে বিবাহকে নিরুসাহিত করা, শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগের প্রদাহকে দ্রুত সনাক্ত করে চিকিৎসা প্রদান জরুরি। এতে করে কান পাকা ও মধ্য কর্ণের রোগের প্রার্দুভাবও কমে যাবে। শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের নিয়মিত হিয়ারিং স্ক্রিনিং করে বধিরতা নির্ণিত হলে হিয়ারিং এইড অথবা কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট করতে হবে। কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট একটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যা সম্পূর্ণ শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশু ও বধির ব্যক্তিদের কানে শুনতে সহায়তা করে।বিশ্ব শ্রবণ দিবস

বিশ্ব জন্মগত ত্রুটি দিবস ২০২০ উদযাপিত বিশ্বে ৬ শতাংশ, বিএসএমএমইউ পরিচালিত গবেষণায় ৯.৮ শতাংশ নবজাতক জন্মগত ত্রুটিতে আক্রান্ত বিশ্ব জন্মগত ত্রুটি দিবস ২০২০ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবজাতক বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশের ২০টি হাসপাতাল নিয়ে জন্মগত ত্রুটির সার্ভিলেন্স ও গবেষণা প্রকল্প “নিউবর্ণ বার্থ ডিফেক্ট (এন.বি.বি.ডি) সার্ভিলেন্স ইন বাংলাদেশ” এর উদ্যোগে এবং বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ নিওনেটাল ফোরাম ও বাংলাদেশ পেরিন্যাটাল সোসাইটির সহযোগিতায় নবজাতকের জন্মগত ত্রুটির উপর এক গুরুত্বপূর্ণ সিএমই প্রোগ্রামের আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো “মেনি বার্থ ডিফেক্ট, ওয়ান ভয়েস (Many birth defects, one voice)”।

আজ মঙ্গলবার ৩ মার্চ ২০২০ইং তারিখ সকাল সাড়ে ১১টায় এ ব্লক অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত উক্ত সিএমই প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমা, স্বাস্থ্য অধিপ্তরেরর লাইন ডিরেক্টর ডা. সামসুল হক খান।

সভাপতিত্ব করেন বিএমডিসির সম্মানিত সভাপতি ও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য, নবজাতক বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান, নিউবর্ণ বার্থ ডিফেক্ট (এন.বি.বি.ডি) সার্ভিলেন্স ইন বাংলাদেশ-এর প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা।

গুরুত্বপূর্ণ ওই সিএমই প্রোগ্রামে জানানো হয়, পৃথিবীব্যাপী নবজাতকদের মাঝে জন্মগত ত্রুটির হার প্রতি ১০০ জনে ৩ থেকে ৬ জন (৩-৬%)। বিএসএমএমইউ-তে পরিচালিত গবেষণা অনুযায়ী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এই হাসপাতালে আসা নবজাতকদের মাঝে এই হার ২০১৯ সালে ছিল ৯.৮ শতাংশ। বিশ্বে প্রতি ৩৩ জন শিশুর মধ্যে ১ জন জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহন করে। সারা বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জন্মগত ত্রুটির প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। বিশ্বে প্রতি বছর শুধুমাত্র জন্মগত ত্রুটির জন্য জন্মের ২৮ দিনের মধ্যে প্রায় ৩ লক্ষ শিশু মারা যায়। শিশু মৃত্যুর এই প্রভাব সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল (SDG) এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনেকাংশে বিরুপ প্রভাব ফেলে।

উক্ত সিএমই অনুষ্ঠানে জন্মগত ত্রুটির হার নির্ণয়, কারণ, প্রতিরোধমূলক পরিকল্পনার উপর আলোচনা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে জন্মগত ত্রুটির হার উপর আরও বক্তব্য প্রদান করেন নবজাতক বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোঃ আব্দুল মান্নান, অবস এন্ড গাইনী বিভাগের অধ্যাপক ডা. বেগম নাসরিন। অনান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার ডা. মাহবুবা খান, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নবজাতক বিভাগের অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কুমার দে, ডা. সাদেকা চৌধুরী মনি, ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান সবুজ, ডা. ইসমাত জাহান, ডা. রুম্পা মনি প্রমুখ।

http://www.anandalokfoundation.com/