13yercelebration
ঢাকা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খালেদা জিয়াকে নিয়ে ভয়াবহ মিথ্যাচার

admin
December 8, 2017 3:13 pm
Link Copied!

কোনো প্রকার ভোট বা জাতির ম্যান্ডেট ছাড়া দেশের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার দখল করিয়া তিনি গায়ের জোরে সবকিছু চালাইতেছেন। আর তাহার সঙ্গে আছে কিছু বন্দুকবাজ খুনি, চোর আমলা, বিচারক নামের কুলাঙ্গার এবং সাংবাদিক নামক কিছু সাংঘাতিক। ইহারা প্রতিনিয়ত সত্যকে মিথ্যা, আর মিথ্যাকে সত্য বানায়। তাহারা দেশের মানুষকে গুম ও খুন হওয়ার ভীতির মধ্যে রাখিয়া সকল অপকর্ম চালাইয়া যাইতেছেন।

এই সব ব্যক্তিদের সহায়তায় দখলদার প্রধানমন্ত্রী জাতিকে সর্বক্ষণ নানাবিধ নাটক দেখায়, গল্প শোনাইয়া ব্যস্ত রাখে। সম্প্রতি তিনি রূপবানের নতুন গীত হাজির করিয়াছেন- “সৌদি আরবে খালেদা জিয়ার ১২০০ কোটি টাকা সম্পদ পাওয়া গেছে, তাহা সৌদি ক্রাউন প্রিন্স তদন্ত করিতেছেন!” এই আওয়াজ করার কারন হইল, সামনে ইলেকশন! তাই মিথ্যার ডালি লইয়া বসিয়াছেন শেখ কন্যা।

“সৌদিতে খালেদা জিয়ার অবৈধ টাকা”- ইহার চাইতে মিথ্যা বানোয়াট গল্প আর কিছু হইতে পারে না। আসুন কয়েকটা তারিখ এবং গসিপ লক্ষ করা যাক। আলোচ্য গল্পের তৈরীকারক হইলেন বেশ্যার দালাল বানোয়াট সাংবাদিক (এই দুই টাইটেলের কারন সম্বলিত বহু খবর অনলাইনে রহিয়াছে) বোরহান কবির। বোরহান গত কয়েক মাস ধরিয়া “বাংলা ইনসাইডার” নামক একটি প্রোপাগান্ডা সাইট খুলিয়াছে হাসিনার টাকায়। ধানমন্ডিতে বিশাল অফিস, অনেক টাকা পয়সা, খানা পিনা, লীগের মন্ত্রী নেতা খেতা, মদ মেয়ে মানুষের আড্ডা হয়। সেইখানে বসিয়া প্রতিনিয়ত মিথ্যার পসরা উৎপাদন করিয়া বোরহান অনলাইনে ছাড়ার পড়ে উহা ফেরি করিয়া বেড়ায় হাছান মাহমুদ, হানিফ, ওবায়দুল কাদের ওরফে কাউয়া কাদের ওরফে অক্সিজেন কাদের, এবং অননলাইনের কিছু অবুঝ স্তাবক। সম্প্রতি ফেরিঅলার তালিকায় নাম লেখাইয়াছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী (অবৈধ) শেখ হাসিনা!
……………………..
গত ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ বোরহান কবির তাহার ‘বাংলা ইনসাইডারে’ একটি হাত বানোনো রিপোর্টে আপলোড করে- “দুবাইয়ে জিয়া পরিবারের হাজার কোটি টাকার সম্পদ”- সংযুক্ত আরব আমিরাতে সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের তালিকায় নাম উঠে এসেছে জিয়া পরিবারের।”

ইহার ১১ দিন পরে ১৩ সেপ্টেম্বর অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বোরহানোর বানোয়াট ভুয়া রিপোর্টটির জিস্ট ফলাও করিয়া বিনাভোটের অবৈধ সংসদে নিজ মুখেই বলেন- “জিয়া পরিবারের দুবাইসহ ১২ দেশে ১২শ’ কোটি টাকা পাচার-সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গোয়েন্দা সংস্থা গ্লোবাল ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্কের (জিআইএন) রিপোর্ট সরকারের হাতে এসেছে এবং এ নিয়ে তদন্ত চলছে।” ……হাসিনার মুখনিসৃত এই মিথ্যাচারগুলি বাংলাদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় ছাপা হইয়াছে, অনলাইনে পাওয়া যাইতেছে। গুম হওয়ার ভয়ে সাংবাদিক ও সম্পদকরা তাহা ছাপিতে বাধ্য। কিন্তু এই সব মিথ্যাচারকারীদের নামে ৫৭ ধারায় কোনো মামলা হয় না! জিআইএন এর নামটি সম্পূর্ন বানোয়াটভাবে ব্যবহার করিয়াছে হাসিনার লোকেরা। আসলে এইরূপ কিছু নাই।
…………………….
৬ ডিসেম্বর বোরহান কবীর ঘুরাইয়া ফিরাইয়া দুই মাস আগের একই প্রোপাগান্ডা আবার নতুন করিয়া ছাড়ে, তাহাতে লিখে- ”সৌদি সরকারের তদন্তে দেখা গেছে, শুধু সৌদি আরব নয়, মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে জিয়া পরিবারের অবৈধ সম্পদ।”

……….. এই বানোয়াট প্রোপাগান্ডার সমর্থনে একটি বানোয়াট ভিডিও ক্লিপ তৈরী করিয়া ফেসবুকে ছাড়িয়াছে বোরহান গং, যাহাতে কানাডার ন্যাশনাল টিভির অন্য ফুটেজের সাথে আলজাজিরা টিভির আরবিতে লেখা ফুটেজ মিক্স করিয়া ওপরে খালেদা জিয়ার ছবি পেস্ট করিয়া ইংরেজীতে সাবটাইটেল দিয়া অ্যাপসের উচ্চারনে ভুয়া নিউজক্লিপ তৈরী করিয়া অনলাইনে ছাড়িয়াছে। অথচ ন্যাশনাল টিভি সম্পূর্ন ইংরেজি ভাষার একটি টেলিভিশন। এইরূপ মিথ্যাচার ও জালিয়াতির বিচার করিবে কে? আবার তাহারা দাবী করিয়াছে, খালেদা জিয়ার নামে নাকি সৌদিতে মার্কেট আছে। কে না জানে ’খালিদা’ এবং ‘আরাফাত’ নাম দু’টি মুসলিম, কেবল সৌদি আরব কেনো, পুরা মিডল ইস্ট জুড়ে ‘খালেদা ও আরাফাত’ নামে নানান প্রতিষ্ঠান রহিয়াছে। থাকাই স্বভাবিক। এইসব কিছুর মালিক কি বেগম খালেদা জিয়া?
………………….
ইহার পরের দিন অর্থাৎ ৭ ডিসেম্বর ঢাকায় অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাহার সংবাদ সম্মেলনে স্বভাবসুলভ মিথ্যাচারে পরিপূর্ন অশ্লীল ভাবভঙ্গি এবং আজেবাজে ভাষায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আবার একই মিথ্যাচার চালাইলেন- “১২’শ কোটি টাকার দুর্নীতি, পত্রিকায় লিখেন না কেনো সাংবাদিকেদের নসিহত ইত্যাদি ইত্যাদি!

অবাক লাগে এই ভবিয়া যে, মাতাল বোরহান কবিরের বানোয়াট মিথ্যাচার শেখ হাসিনার মত একজন জাতীয় নেত্রী (যিনি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন) কিভাবে দায়িত্বহীন ভাবে ফেরি করিয়া বেড়ায়? ইহাদের কি কোনো লাজ লজ্জা শরম হায়া নাই?
…………………
অথচ সত্য হইল এই যে, বিএনপি চেয়ারপারসন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাহার সকল সহায় সম্পদের হিসাব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর ফাইলে উল্লেখ করিয়াছেন। ইহার কপি দুদকের কাছেও রহিয়াছে। এই বিষয় নিয়া কাহারও কোনো মামলা বা অভিযোগ নাই। বেগম জিয়া তাহার সকল সহায় সম্পদ ও আয়ের উপর আইন মোতাবেক নিয়মিত কর পরিশোধ করিয়া থাকেন। ইহার বাহিরে দেশে বা বিদেশে খালেদা জিয়ার আর কোনো সম্পদ নাই। গত ১১ বছর যাবৎ তিনি ক্ষমতার বাহিরে। অন্যদিকে বর্তমান দখলদার প্রধানমন্ত্রী ৯ বৎসর যাবৎ কায়দা কানুন করিয়া অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করিয়া আছেন।

এই পর্যন্ত রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করিয়া সকল প্রকারের চেষ্টা চরিত্র করিয়া খালেদা জিয়ার কোনো অবৈধ সম্পদ খুঁজিয়া না পাইয়া হতাশ হইয়া শেখ হাসিনা অবশেষে গোয়েবলস বোরহান কবীরের বানোয়াট খবর-নির্ভর হইয়ছেন। আসলে এইসকল মিথ্যাচার করিয়া জাতিকে বিভ্রান্ত রাখার আড়ালে শেখ হাসিনা নিজের আমলে ৬ লক্ষ কোটি টাকা পাচারের ঘটনাকে ধামা চাপা দিতে চাহিতেছেন। কিন্তু এই করিয়া কি তিনি পার পাইবেন? সময় যতই লাগুক না কেনো, বাংলাদেশ ব্যাংক হইতে হাজার কোটি টাকা লুট, শেয়ার মার্কেট লুট, বিভিন্ন ব্যাংক হইতে হাজার হাজার কোটি টাকার চুরি, বড় বড় প্রজেক্ট লুটপাট, ঘুস, কমিশন, খুন গুম- সবকিছু্র বিচার এই বাংলাদেশের মাটিতে হইবে, বলিয়া জনগন মনে করেন।

মজার বিষয় হইল, এই বোরহান কেবল খালেদা জিয়ার নামে বানোয়াট খবর বানায় না, হাসিনার নামেও বানায়। গত ৬ অক্টোবর নোবেল প্রাইজ ঘোষণা করার আগে শেখ হাসিনাকে নোবেল প্রাইজ পাওইয়া দেওয়ার নামে তিন মিলিয়ন ডলারের একটা অংশ পায় বোরহান। ইহার পরে প্রতিদিন এমন বানোয়াট খবর লিখিতে থাকে যে অনেকের সাথে শেখ হাসিনার নিজেরও মাথা নষ্ট হইয়া যায়। তাহার বানোয়াট খবরের হেড লাইন ছিল এইরকম>> “নোবেল শান্তির সংক্ষিপ্ত তালিকায় শেখ হাসিনা” > “শেখ হাসিনাই পপুলার চয়েস” > “শেখ হাসিনাকে নোবেলের জন্য বিশ্বের রেকর্ড সংখ্যক ৪.৩০ লাখ পিটিশন” > “১০ কারণে নোবেল পেতে পারেন শেখ হাসিনা” > “কে পাবে পুরস্কার – হাসিনা নাকি মার্কেল” “নোবেল জয় করেই দেশে ফিরবেন” >

“শেখ হাসিনাকে ফোনের কাছে থাকতে বলেছে নোবেল কমিটি”!! শেষ পর্যন্ত এই মহিলার নিজের মাথা এতটাই নষ্ট হইয়া যায় যে- নোবেল না পাওয়ার দুঃখে মাস খানেক শয্যশায়ী হইয়া পড়েন! বোরহানের মত বাটপারের পাল্লায় পড়িয়া শেখ হাসিনা ক্রমশ মিথ্যাকে সত্য ভাবিতে থাকেন, আর সত্য হইতে ক্রমাগতভাবে দূরে সরিয়া যাইতে থাকেন। তিনি ভোটে কখনই জিতিয়া আসিতে পারিবেন না বুঝিতে পারিয়া বাংলাদেশের জনগনকে শত্রু ভাবিতে থাকেন। ফলে উনার ভিতরে দেখা দিয়াছে এক অদ্ভুদ রোগ, যার নাম- “ইলেকশন এন্ড পাবলিক ফোবিয়া সিনড্রেম”! ইহার দাওয়াই আছে কেবল পাবলিকের হাতে।

শামসুল আলম

http://www.anandalokfoundation.com/