13yercelebration
ঢাকা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মনের খেয়াল আর নেশাতে গড়ে উঠেছে মেহেরপুরের দারিয়াপুরে রাজিবের অবাক করা ছবির যাদুঘর

admin
September 22, 2017 11:45 pm
Link Copied!

মেহের আমজাদ, মেহেরপুর (২২-০৯-১৭):  আব্রাহাম লিংকন,হিটলার,মাদার তেরেসা,কাঙাল হরিনাথ, রবি ঠাকুর, কবি নজরুল, মহাত্মা গান্ধি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ জিয়া, বাঘা যতীন, ১ম বিশ্ব সুন্দরী কিকি হ্যাকসনসহ জগত বিখ্যাত কার ছবি স্থান পায়নি সেখানে? সারা বিশ্বের প্রাচীন,মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের বিভিন্ন স্মরনীয় ও বরনীয় ব্যক্তিদের আলোক চিত্রের সমাহারে ব্যক্তি উদ্যোগে ছবির জাদুঘর গড়ে তুলেছেন জাহিদ হাসান রাজিব। যা দেখে অবাক হতে হয় বৈকি !

মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের মৃত আব্দুল বারির এক মাত্র ছেলে জাহিদ হাসান রাজিব। মনের খেয়ালকে প্রাধান্য দিয়ে আজ ইতিহাসে নাম লেখাতে যাচ্ছে এ যুবক। ৪টি টিন সেডের কাঠের ঘরে ১০ বাই ১২ সাইজের কাঠের ফ্রেমে থরে থরে সাজানো জগৎখ্যাত রাজা-বাদশা, ভাস্কর, ভাষা সৈনিক, যোদ্ধা, কবি-সাহিত্যিক সঙ্গীত শিল্পী, ব¬গার সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যাদের অবদান রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সহস্রাধীক আলোক চিত্র সেখানে স্থান পেয়েছে।

মেহেরপুর থেকে ঐতিহাসিক মুজিবনগর যাওয়ার পথে মোনাখালি ব্রিজ পার হয়ে কয়েক’শ মিটার পর দারিয়াপুর বাজারের প্রবেশ মুখে হাতের বামে ফিরোজা বারি কমপে¬ক্সে। ওই কমপ্লে¬ক্সের ভিতরে স’মিল ব্যবসায়ী জাহিদ হাসান রাজিব গড়ে তুলেছেন তার এই অনন্য ছবির সংগ্রহ শালা।

সংগ্রহ শালায় ঢুকতেই চোখে পড়বে আলোক চিত্রে সুসজ্জিত একটি সুবিশাল প্রবেশদ্বার। ভিতরে যেতেই ছায়ঘন পরিবেশে বিশাল বৃক্ষাদির সমাহারে গড়ে উঠা ফিরোজা বারি কমপ্লেক্স । এই কপে¬ক্সে-এর মধ্যেই কাঠের বেড়া আর টিন সেডের ছাওনি দিয়ে গড়ে উঠেছে শতশত নামি-দামি মনিষীদের ছবি সম্বলিত ছবির যাদু ঘর।

কিভাবে তার এ সংগ্রহ শুরু তার জবাবে রাজিব হাসান বলেন, আমার দাদু আমার জন্মের পূর্বেই মারা যাওয়ায় তাকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি। প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে আমার প্রোপিতামহের ট্রাংকের মধ্যে আমি দাদুর একটি ছবি পাই। ছবিটি সংরক্ষণ করে দেওয়ালে টাঙ্গিয়ে দিই। এর কিছুদিন পরে আমার দাদু ছবির পাশে বাবা,চাচার ছবিগুলো পাশা পাশি টাঙ্গিয়ে দিয়। এরপর যোগকরি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি। বঙ্গবন্ধুর ছবি রাখার পর বিখ্যাত ব্যক্তিদের ছবি সংরক্ষণ-এর ইচ্ছাটা প্রবল হয়ে উঠে । সেই ইচ্ছা দিনে দিনে রূপ নেয় নেশায়। তারপর আর থেমে থাকা নয়, শুরু হয় ছবি সংগ্রহের অভিযান। বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ও ইন্টারনেট ঘেটে গত পাঁচ বছরে তিনি এসব ছবি সংগ্রহ করেছেন বলে জানান।

তাকে এ কাজে যারা বেশি সহযোগিতা করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও মুজিবনগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল ইসলাম চান্দু ও মেহেরপুর-এর অরণি থিয়েটার-এর সভাপতি নিশান সাবের। এছাড়া স্থানীয় নটরাজ গ্রুপ থিয়েটারের সবাই তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন। রাজিব নটরাজ গ্রুপ থিয়েটার-এর সভাপতি। দুই সহস্রাধিক ছবি বাইন্ডিং করে টানানোর পাশাপাশি আরও পাঁচ শতাধিক ছবি তার সংগ্রহে আছে। ঘরে জায়গা সংকটের কারণেই সেসব ছবি বাইন্ডিং করে রেখে দেয়া হয়েছে।

রাজিবের স্বপ্ন আগামী বছর তার মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত ফিরোজা বারি কমপে¬ক্স ৬ একর জমির উপর তিনি তৈরি করবেন আধুনিক যাদুঘর সহ ছবির শিক্ষালয় । যে জাদুঘরটি হবে বাংলাদেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ ছবির জাদুঘর। আর শিক্ষালয়ে থাকবে নতুন প্রজন্মেরর জন্য বিখ্যাত ব্যক্তিদের ছবির পাশা পাশি তাঁদের ব্যক্তি ও কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রামান্য চিত্র ও আলোকচিত্র।

http://www.anandalokfoundation.com/