13yercelebration
ঢাকা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নবীগঞ্জ পৌরসভার অবৈধ নিয়োগ বাতিলের আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত ২৬জুলাই, নিয়োগ পরিবর্তনের দাবী বঞ্চিতদের

admin
July 22, 2018 3:56 pm
Link Copied!

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি ॥  নবীগঞ্জ পৌরসভার ৭টি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় কোন অনিয়ম, অসংগতি হয়েছে কি না এ বিষয়ে আগামী ২৬ জুলাই বৃহস্পতিবার তদন্ত অনুষ্টিত হবে। উক্ত তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পত্র দেয়া হয়েছে। এ খবর পেয়ে চাকুরী থেকে বঞ্চিতদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। বঞ্চিতদের দাবী উক্ত নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি হয়েছে। ফলে এই নিয়োগ বাতিল করে নতুন করে নিয়োগ দিতে হবে।

উল্লেখ্য, নবীগঞ্জ পৌরসভায় ৭টি পদে লোক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে এবং তা বাতিল করে নতুন করে নিয়োগ দেয়ার দাবী জানিয়ে চাকুরী বঞ্চিতরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল, পৌর সভা কার্যালয়ে ভাংচুর করে এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সচিব, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার এবং হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর ‘অবৈধ নিয়োগ’ বাতিলের আবেদন করেন। আবেদনের ৩ মাস পর গত ৮ জুলাই হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া স্বাক্ষরিত একপত্রে আগামী ২৬ জুলাই নিয়োগের তদন্ত অনুষ্টিত হওয়ার কথা জানানো হয়। গত ১৮ এপ্রিল চাকুরী বঞ্চিত আমড়াখাই গ্রামের আবুল হোসেন এর পুত্র ফায়েজুর রহমান রোল নং (২৪) সহ ২০ জনের স্বাক্ষরিত অভিযোগ সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে দাখিল করলে উক্ত তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়।

অভিযোগ সুত্রে প্রকাশ, চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী পত্রিকার মাধ্যমে নবীগঞ্জ পৌরসভার সার্ভেয়ার, সহকারী এ্যাসেসর, সহকারী লাইসেন্স পরিদর্শক, হিসাব সহকারী, নিম্নমান সহকারী কাম-মুদ্রাক্ষরিক, ট্রাক চালক, অফিস সহায়কসহ ৭টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে ২৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ৭টি পদের বিপরীতে প্রায় ৩ শ ৮৬ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন। পরবর্তীতে চারিত্রিক সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্রে সিল স্বাক্ষরে ক্রটিসহ বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় ১ শত ৪২ জনের আবেদন বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। অবশিষ্ট ২ শ ৪৪ জনের লিখিত ও মৌখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের জন্য প্রবেশ পত্র দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ১০ টায় লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। তড়িগরি করে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই প্রকাশ করে এবং ওইদিন গভীর রাত পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, একদিন পরেই পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই প্রকৃত মেধাবীদের বঞ্চিত করে পৌর মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরী’র আত্মীয় স্বজনসহ মেয়রের নিজস্ব লোকদের সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে ৭ টি পদেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ ফলাফল প্রকাশের সাথে সাথে উক্ত ‘অবৈধ’ নিয়োগ মেনে নিতে পারেননি পরীক্ষায় অংশগ্রনকারীরা। তারা কোন উপায় না পেয়ে গত ১৪ এপ্রিল রোববার দুুপুরে নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার মোড় থেকে বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্লে-কার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে পৌরসভা কার্যালয় ঘেরাও করে। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা নিয়োগ বাতিলের জন্য ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন।

তারা অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, ওই নিয়োগ পরীক্ষায় নবীগঞ্জ জে কে সরকারী মডেল হাই স্কুলের শিক্ষক রাজিব দাশ হিসাব সহকারী পদে লিখিত পরীক্ষায় মেয়রের ঘনিষ্ট আত্মীয় জুয়েল চৌধুরী নামের যুবকের পাশে বসে তাকে সহযোগীতা করেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে মৌখিক পরীক্ষায় রাজিব দাশ অংশ গ্রহন করেননি। অবশেষে এ পদে চাকুরী হয়েছে জুয়েল নামের ওই যুবকেরই। এভাবে আরও একাধিক পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও শেষ পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষায় অংশ না নেয়ায় ওরা যে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রক্সি দিয়েছে তা নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারী স্কুলের শিক্ষক রাজিব দাশ এর আগেও পৌরসভা পরিচালিত পৌর আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে মেয়রের প্রছন্দের লোকদের উত্তীর্ণ করে। এ রকম অন্তত ৩/৪ জন প্রক্সি পরীক্ষার্থী অংশ নেয় ভাল রেজাল্ট হওয়ার পরও কিন্তু তারা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। পরীক্ষায় ২ ঘন্টা পূর্বেই মেয়রের নিজস্ব লোকদের কাছে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। এছাড়াও মেয়রের ঘনিষ্ট বলে খ্যাত নবীগঞ্জ বাজারের অসিম বণিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২/৩ মাস পূর্বেই ঘোষনা দিয়েছিল তার স্ত্রী উমা বণিক নবীগঞ্জ পৌরসভায় চাকুরী পাবে। এমনকি বাস্তবেও ৪০ মিনিট পূর্বে প্রশ্ন পত্র দেওয়া হয়। এবং উমা বণিকের আপন দেবর সুমন বণিক একই বেঞ্চে বসে প্রক্সি পরীক্ষার মাধ্যমে উক্ত উমা বণিককে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সহায়তা করেন।

এছাড়া অনেক পরীক্ষার্থীদের যে কাগজের অজুহাতে আবেদন বাতিল করেছেন, আবার একই কাগজের ভিত্তিতে অনেককে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এদিকে নিয়োগ বঞ্চিতরা আগামী ২৬ জুলাই স্বশরীরে পৌরসভা কার্যালয়ে তদন্ত অনুষ্টানে উপস্থিত থাকার জন্য আবেদনকারীরাসহ সকল বঞ্চিতদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের দৃঢ বিশ^াস অতি গোপনীয়তা রক্ষা করে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষভাবে তদন্ত কাজ সম্পন্ন হবে। তারা উক্ত অবৈধ ভাবে নেয়া নিয়োগ বাতিল করে নতুন করে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহনের ব্যবন্থা গ্রহনের প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেয়ার জন্য তদন্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবী জানান। এছাড়া একটি সরকারী হাইস্কুলের শিক্ষক হয়ে রাজিব দাশ কিভাবে এই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ফক্সি দেয়, তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।

http://www.anandalokfoundation.com/