বিশেষ প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলায় কেওড়া গ্রামে মৌমিতা মিত্র বাস করে এক পরিবারে ৷ মৌমিতা থাকে মামার বাড়িতে ৷ ছোট বেলায় মৌমিতার বাবা মারা যায়। মৌমিতার বাবা মারা যাওয়ার পর মৌমিতার মায়ের শশুর শাশুরি মৌমিতার মাকে অত্যাচার শুরু করে তাদের ভিটা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য!
নিরুপায় মৌমিতার মা মৌমিতাকে নিয়ে মামার বাড়ি চলে আসে। মৌমিতার কোনো ভাই বোন ছিলো না। মৌমিতার মামার বাড়ি এসেও মৌমিতার মা শান্তি পাচ্ছিল না। মৌমিতার মামা ছিলো দুইজন। দুই মামা কিছুদিন খাওয়ানোর পর মৌমিতা ও মৌমিতার মাকে চলে যেতে বলেন তাদের বাড়ি থেকে। কারণ মৌমিতার মামারাও ছিলো খুব গরিব। অন্যের জমিতে চাষ করে কোনোমতে সংসার চালাতো। তাই মৌমিতার মা মৌমিতাকে তার মামার বাড়ির দাদু দিদির কাছে রেখে চট্টগ্রাম শহরে চলে আসেন।
চট্টগ্রাম শহরে আসার পর তিনি গার্মেন্টেস এ শ্রমিক হিসেবে চাকরি নেন এবং গার্মেন্টস এ কাজ শুরু করে দেন। এই চাকরি করে মৌমিতার মা আটহাজার টাকা বেতন পান। কিছু টাকা নিজে রেখে বাকি টাকাগুলো মৌমিতার পড়ালেখা ও মৌমিতার খাবার দাবারের জন্য পাঠিয়ে দেন। মৌমিতার মা যখন চাকরিতে চলে যান তখন মৌমিতার বয়স ছিল পনেরো বছর।
দেখতে দেখতে দুই বছর কেটে যায় কোনোরুপ ঝামেলা ছাড়াই। মৌমিতার মাও মৌমিতার বিয়ের কথা ভাবছিলেন। পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় বিয়েটা ভালো পরিবারে দিতে পারছিলেন না। মৌমিতা একদিন তার এক বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে যান। এই থেকেই তার জীবনে নেমে আসে এক অশান্তির ছায়া। মৌমিতা যেই গ্রামে তার বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে যাই সেই গ্রামে হঠাৎ দেখে ফেলে চ্যায়ারম্যানের ছেলে। তখন মৌমিতার বান্ধবী মৌমিতাকে দ্রুত ঘরে ফেরার জন্য বলে কারণ চ্যায়ারম্যানের ছেলের চোখ ভালো না। সন্ত্রাসি করে। ওর নামে অনেক ধর্ষনের মামলাও আছে। উল্লেখ্য চেয়ারম্যানের ছেলের নাম আবদুল মতিন।
মৌমিতা খুব দ্রুত ঘরের দিকে রওনা হয়। কিন্তু কিভাবে কিভাবে চ্যায়ারম্যানের ছেলে আবদুল মতিন মৌমিতার বাড়ির ঠিকানা পেয়ে গেলো। রাতে এসে মৌমিতার দাদু দিদিকে ডাকল আর মদ খেয়ে খেয়ে বললো আমি তোমাদের নাতনি কে বিয়ে করতে চাই। কাল মৌমিতাকে বৌ সাজিয়ে রাখবে। এটা বলে চলে গেলো সে । পরদিন আবদুল মতিন এসে মৌমিতাকে সত্যি সত্যি বিয়ের প্রস্তাব দেয় । বিয়ের প্রস্তাবে মৌমিতার দাদু বলে বাবা তুমি মুসলিম আর আমাদের নাতিন হিন্দু । আমাদের জাত আলাদা৷ তাই মৌমিতার সাথে তোমার বিয়ে হবে না বাবা। চলে যাও।
এটা বলাই মৌমিতার দাদুকে অনেক মারধর করে চেয়ারম্যানের ছেলে আবদুল মতিন এবং চলে যাই আর যাওয়ার সময় বলে মৌমিতাকে সে বিয়ে করবেই। মৌমিতার দাদু ও মৌমিতার মামা সাথে সাথে গিয়ে বিষয়টি চেয়ারম্যানকে ও থানায় জানায়। কিন্তু থানাতে গিয়েও কোনো লাভ হয় নি৷কারন তারা থানাতে টাকা দিতে পারে। ওদিকে চ্যায়্যারম্যানকে ও জানিয়ে কোনো লাভ হয়নি। মৌমিতার মা ঘঠনাটি জেনে সন্ধ্যায় শহর থেকে চলে আসে ৷ এবং পরদিন মৌমিতাকে পরদিন শহরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷কিন্তু মৌমিতার ভাগ্যে তা ছিলো না।
রাতে চ্যায়ারম্যানের ছেলে তার সন্ত্রাসি দলবল নিয়ে সবাইকে মারধর করে মৌমিতাকে তুলে নিয়ে চলে যায়। এবং রাতের মধ্যেই মৌমিতাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিয়ে বিয়ে করে । অতঃপর মৌমিতাকে জানোয়ারের মতো ধর্ষন করে। মৌমিতার প্রচুর রক্তক্ষরন হয়। এতে এই অবস্থায় মৌমিতাকে রেখে পালিয়ে যায় চ্যায়ারম্যানের ছেলে আবদুল মতিন। মৌমিতাকে সকালে খুজে পায় তার পরিবার। কিন্তু ততক্ষনে মৌমিতার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায় এবং হাসপাতালে মৌমিতার মৃত্যু হয়। প্রশাসণ পুলিশের ওসি ও সাতকানিয়া উপজেলার চ্যায়ারম্যানকে বরখাস্ত করেন। আবদুল মতিনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।