13yercelebration
ঢাকা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বাংলাদেশে থাইরয়েড হরমোনজনিত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি

admin
May 25, 2018 9:08 pm
Link Copied!

বিশেষ প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশে সম্ভাব্য থাইরয়েড হরমোনজনিত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি। যাদের মধ্যে প্রায় ৩ কোটি রোগীই জানেন না, তাদের এই সমস্যা রয়েছে। এছাড়া নারীদের থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যা পুরুষদের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বেশি। ঢাকা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গর্ভবতী নারীদের উপর চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, এদের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশের কোনো না কোনো থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যা রয়েছে।

শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বিশ্ব থাইরয়েড দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি (বিইএস)এসব তথ্য জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিইএসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক পাঠান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. হাফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহজাদা সেলিম প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ৬টি মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। কিন্তু উন্নত বিশ্বে সাতটি মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং যার ৭মটি হচ্ছে থাইরয়েড হরমোন বিষয়ক তথ্য অধিকার। যেকোনো দেশে এই বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করা খুবই সহজ একটি কাজ।

থায়রয়েডজনিত রোগ বিশ্বের ১ নম্বর রোগ উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশে সম্ভাব্য থাইরয়েড হরমোনজনিত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি। যার মধ্যে প্রায় ৩ কোটি রোগীই জানে না তাদের এই সমস্যা রয়েছে। তাই এই রোগ প্রতিরোধ কিংবা চিকিৎসার ক্ষেত্রে জনসচেতনতাই মুখ্য। থাইরয়েড হরমোন কম বা বেশি নিঃসৃত হওয়া উভয়ই রোগের সৃষ্টি করে। তাই বিয়ের আগে কিংবা গর্ভধারণের পূর্বে নারীদের অবশ্যই থাইরয়েড পরীক্ষা করে নেয়া উচিৎ।

এ রোগের সম্ভাবনা থাকলে যথাযথ চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করে তারপর গর্ভধারণ করা উচিৎ। নইলে সন্তানও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এ হরমোনের তারতম্যের ফলে শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, হঠাৎ করে শরীর মোটা ও চিকন হওয়া, মাসিক ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, হার্টের সমস্যা, চোখ ভয়ংকর আকারে বড় হয়ে যাওয়া, বন্ধ্যাত্ব, এমনকি ক্যানসারের সৃষ্টি হতে পারে। সাধারণত একজন পুরুষের বিপরীতে ১০ জন নারী থাইরয়েডে আক্রান্ত হয়।

এ রোগের প্রতিরোধের বিষয়ে বক্তারা আরও বলেন, সব বয়সের মানুষের স্ক্রিনিং, আয়োডিনের অভাব, ভেজাল খাদ্য ও আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করা এ রোগের প্রধান প্রতিরোধক। এছাড়া সরকার খুব সহজে থাইরয়েডের বাধ্যতামূলক স্ক্রিনিং চালু করতে পারে। পাশাপাশি বাজারের লবণগুলোর আয়োডিনের মান নিশ্চিত করতে পারে। আমাদের গবেষণা অনুসারে বাজারের লবণে সঠিক আয়োডিনের মাত্রা নেই। এছাড়া প্রতিটি সন্তান জন্মগ্রহণের পর বাধ্যতামূলকভাবে থাইরয়েড পরীক্ষা নিশ্চিত করা উচিৎ। কেননা বিকলাঙ্গ সন্তান আমাদের কারোরই কাম্য নয়। আর বাবার এ সমস্যা থাকলে কোনো ঝুঁকি নেই বরং মায়েদের ক্ষেত্রে রয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের শহরের ২০ থেকে ৩০ ভাগ গর্ভবতীরা থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত। আর গ্রামের পরিস্থিতির কোনো রেকর্ড নেই। তাই ধারণা করা যায়, সেখানকার অবস্থা আরও করুণ।

দেশেই থাইরয়েডের উচ্চমানের চিকিৎসা রয়েছে উল্লেখ করে এই বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, এই রোগের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এখানে আয়োডিনের ডোজ মাত্র ৩০০ টাকা আর সিঙ্গাপুরে তার খরচ ৫০ হাজার টাকা। অন্যান্য দেশে আরও বেশি। এদিকে এই রোগের পরীক্ষা করাতে দেশের সরকারি হাসপাতালে খরচ মাত্র ২৫০ টাকা আর বেসরকারিতে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। এছাড়া দেশের সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে হরমোন বিষয়ক চিকিৎসক রয়েছেন। পাশাপাশি অন্যান্য বিভাগের ডাক্তাররা চিকিৎসা সম্পন্ন করতে পারেন।

http://www.anandalokfoundation.com/